রাবনাবাদপাড়ে আমফান জলোচ্ছ্বাসের লোনা পানিতে মরে গেছে হাজারো হাঁস-মুরগি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » রাবনাবাদপাড়ে আমফান জলোচ্ছ্বাসের লোনা পানিতে মরে গেছে হাজারো হাঁস-মুরগি
শুক্রবার ● ২৯ মে ২০২০


প্রতীকী ছবি

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
আমফান তান্ডবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে বন্দী থাকা রাবনাবাদ পাড়ের জনপদের নয় গ্রামের আড়াই হাজার পরিবারে দুরবস্থার যেন শেষ নেই। এখন এসব পরিবারের শত শত হাঁস-মুরগি মারা গেছে। আমফানের পরের দিন থেকে হাঁস-মুরগির যেন মড়ক লেগেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জানায়, লোনা পানিতে সব বন্দী হয়ে আছেন। ওই পানিতে এখন পচন ধরেছে। লোনা পানি খেয়ে অধিকাংশ পরিবারের হাঁস-মুরগি মরে সাবাড় হয়ে গেছে। এধারা অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিনে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, এমন কোন পরিবার নেই যার হাঁস-মুরগি মরে নাই। হাজারো হাঁস-মুরগি মারা যাওয়ার খবর মিলেছে। চারিপাড়া গ্রামের শিখা বেগম জানান, তার ২২টি হাঁস মারা গেছে। ওই গ্রামের হাসিনা বেগমের ছিল ছোট্ট একটি খামার। তার অন্তত ৫৫টি হাঁস মরে গেছে। চরচান্দুাপাড়ার কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, তার ৪৬টি হাঁস ১৪টি মুরগি মারা গেছে। একইভাবে রবিউল মালের ১৫টি হাঁস, ১০টি মুরগি। জহিরুল মাঝির ২৬টি হাঁস, ছয়টি মুরগি। গেন্দু হাওলাদারের ৩০টি হাঁস, ১০টি মুরগি। নেহাল জানালেন তাঁর একটি ফার্ম ছিল, এরই মধ্যে ৮০টি হাঁস, ১৪টি মুরগি মওে গেছে। জামাল কারালের মারা গেছে ১৫টি হাঁস। এমন কোন পরিবার নেই যার হাঁস-মুরগি মারা যায়নি। সকলের ভাষ্য জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধের ভেতরে জমে থাকা লোনা পানি খেয়ে এসব হাঁস-মুরগি মরে গেছে। এখনও ঝিমুচ্ছে আর মরছে। গবাদিপশু এ পানি খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। চরচান্দুপাড়ার মানুষ কোন উপায় না পেয়ে জমানো লোনা পানি অপসারনে বাঁধের একটি স্পটে কেটে দিয়েছে। এমনিতেই রাবনাবাদ পাড়ের নয় গ্রামের মানুষের বাড়িঘর জনপদ সব জোয়ারের পানিতে ডুবছে। নষ্ট হয়ে গেছে বাড়ি-ঘর, ভেসে গেছে পুকুর, রাস্তাসহ টয়লেট পর্যন্ত। চাল-চুলাহীন এ মানুষগুলো জীবন-জীবিকায় যোগান দিতে প্রত্যেকেই হাঁস-মুরগি পালন করতেন। কিন্তু লোনা পানির কারণে হাঁস-মুরগি মরে সাবাড় হয়ে গেছে। মানুষগুলো এখন নিঃস্ব হয়ে গেল। তাঁরা সরকারি পুনর্বাসনের দাবি করেছেন। কলাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রমান জানান, লোনা পানিতে বন্দী থাকা গ্রামগুলোর কৃষকরা বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কলাপাড়ায় ছয়টি ইউনিয়নের ৭৫০ দরিদ্র নারীকে ২০ টি করে হাঁস দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে লালুয়ার ১২৫টি পরিবারের হাঁসগুলোর অনেক মারা গেছে। মাঠ পর্যায়ে খোজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া লোনা পানি খেয়ে গবাদিপশু ডায়রিয়া আক্রান্তের খবর দিলেন এ কর্মকর্তা।

এমইউএম/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ২০:০২:৫০ ● ৪০১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ