ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ এবং সবুজ বেষ্টনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রথম পাতা » মুক্তমত » ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ এবং সবুজ বেষ্টনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
শুক্রবার ● ২৯ মে ২০২০


---

কামাল হাসান রনি॥
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে কলাপাড়া উপজেলার উপকূলীয় বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কুয়াকাটা ও গঙ্গামতি সাগরপাড়ের বনাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম নয়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও  ঝাউগাছগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ছোবল থেকে উপকূলীয় এলাকা রক্ষায় ঢাল হিসেবে কাজ করেছে সাগর পাড়ের সবুজ বেষ্টনী আর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এই বন না থাকলে উপকূলে বড় ধরণের তাণ্ডব হতে পারতো বলে স্থানীয় প্রবীনদের অভিমত। কাদের মতে, প্রবল শক্তির এই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সেভাবে আঘাত হানতে পারেনি বনের গাছপালার কারনে।
ভূখণ্ডে আঘাত হানার সময় কুয়াকাটা এলাকায় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪০ কিলোমিটার, কিন্তু উপকূলীয় গাছপালার কারণে সেটির প্রভাব ঘণ্টায় ৮০/৯০ কিলোমিটারের মত অনুভূত হয়। এই বনাঞ্চল  না থাকলে উপকূলে বড় ধরণের তাণ্ডব হতে পারতো বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
উপকূলীয় বনাঞ্চল উপকূলবাসীকে রক্ষা করেছে প্রচণ্ড গতিবেগের বাতাস ও জলোচ্ছ্বাস থেকে।
বনাঞ্চলের  কারণে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাস বাধাগ্রস্ত হয়ে অপেক্ষাকৃত কম গতি নিয়ে লোকালয়ে পৌঁছায়।
বনে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ যেখানে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ছিল, সেটা বন পার হয়ে লোকালয়ে পৌছাতে শক্তি হারিয়ে দমকা বাতাসে রূপ নেয়।
অন্যদিকে, জলোচ্ছ্বাস লোকালয়ে পৌঁছানোর আগে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক কমে যায়। এ কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি বা ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তেমন এবারও ছিলনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ঠেকাতে এর আগেও ঢাল হিসেবে ভূমিকা রেখেছে উপকূলীয় বনাঞ্চল।
বিশেষ করে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলার তাণ্ডব থেকে কুয়াকাটার ঝাউবন ও গঙ্গামতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল উপকূলকে রক্ষা করে। যদিও সেই দুর্যোগে বড় ধরণের ক্ষতচিহ্ন বহন করে চলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই এলাকার বিস্তৃর্ণ বনাঞ্চল।
তবে এবারের ক্ষয়ক্ষতি সিডরের মতো না হওয়ায় বন খুব দ্রুত নিজ সক্ষমতায় পূর্বের অবস্থায় ফেরত যাবে বলে আশা করছে স্থানীয়রা। সেক্ষেত্রে বন বিভাগের সুনজর আশা করছে উপকূলবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ২১:০০:৩৮ ● ৫৬৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ