মাহিলাড়া ইউপি কার্যালয়ে হামলাইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামি আ‘লীগের ১০নেতা-কর্মী

প্রথম পাতা » বরিশাল » মাহিলাড়া ইউপি কার্যালয়ে হামলাইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামি আ‘লীগের ১০নেতা-কর্মী
রবিবার ● ৪ মে ২০২৫


---

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিযন বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ফেলে রেখে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছে। শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে উপজেলার বেঁজহার গ্রামস্থ ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারী ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে মাহিলাড়া ইউনিয়ন বিএনপি ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এদিকে বিএনপি নেতার ওপর হামলার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আ’লীগের ১০নেতাকর্মীকে আসামি করে থানায় একটি মারামারির মামলা দায়ে হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান পিকলু আত্মগোপণে থাকায় তার বাবা ওই ইউনিয়নের সাবেক চেযারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কালিয়া দমন গুহ অভিযোগ করে বলেন, মাহিলাড়া  হাট ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে  সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাহিলাড়া ইউনিযন বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহ্জাহান শিকদার পরাজিত হয়। পরাজিত সভাপতি প্রার্থী শাহ্জাহান শিকদারকে সমর্থন না করার অভিযোগ এনে শাহ্জাহানের সহোদর ভাই মাহিলাড়া ইউনিযন বিএনপির সদস্য সবুজ শিকদারের নেতৃত্বে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। হামলাকারীরা নিচতলা ও দোতলার ২টি কেসি গেটের তালা ভেঙ্গে দোতলায় উঠে চেয়ারম্যানের কক্ষের গ্লাসের ১টি জানালা ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় চেয়ারম্যান পিকলু  তার ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন রেখে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। এরপর হামলাকারীরা পরিষদের ৪টি সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায়। ওই রাতেই বাড়ি ফিরে আমার ছেলে চেয়ারম্যান পিকলু আমাদের কাছে হামলার ঘটনার বর্ননা দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা সবুজ শিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভাতিজা অন্তর শিকদারের জন্য চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট আনার জন্য আমি ও ভাতিজা শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদে যাই। ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু ও মোটর সাইকেল চালক পলাশ হাওলাদারকে  ডাকাডাকি করি। তারা দোতলা থেকে নেমে অসময়ে ডাকাডাকি করার কারণে আমার ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে পিকলু চাকু বের করে আমাকে কোপ দেয়। আমি আত্মরক্ষার্থে ডান হাত দিয়ে কোপ ফিরালে কোপ ডান হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলে লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্থাণীয় সূত্রে জানাগেছে, মাহিলাড়া বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সবুজ শিকদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারী ইউপি চেয়ারম্যানসহ উপজেলার ৭ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে মাহিলাড়া ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রোববার বেলা ১১টার দিকে মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি শাজাহান শিকদার, সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল লোকমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মিলন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহিন শিকদার, মাহিলাড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকির খলিফা, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন আকন, জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কায়েস সিকদার প্রমুখ। আহত বিএনপি নেতা সবুজ শিকদার বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সৈকত গুহ পিকলু, তার সহোদর ভাই উপজেলা যুবলীগের সদস্য সৈলিল গুহ পিন্টু, মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক কালাম মৃধা, গাড়ি চালক যুবলীগ কর্মী পলাশ হাওলাদারের নামোল্লেখসহ আ’লীগের ১০ নেতাকমীকে আসামি করে রোববার সকালে গৌরনদী থানায় একটি মারামারি মামরা দায়ের করে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজীব হোসেন বলেন,  খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পৌছে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দোতলার একটি জানালা ভাংচুর দেখতে পাই। ওই কক্ষের ভেতরে চেয়ারম্যানের ২টি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। সরকারি ভবন ভাংচুরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ওসি আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, খবর পেয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল ইউনিয়ন পরিষদে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিএনপি নেতা সবুজ শিকদারের দাযেরকৃত মামলার এজাহারভূক্ত আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।

 

এএসআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪০:০৬ ● ১০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ