চরফ্যাশনে ভূঁয়া নামজারি সৃজনের অভিযোগ

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চরফ্যাশনে ভূঁয়া নামজারি সৃজনের অভিযোগ
রবিবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২৩


চরফ্যাশনে ভূঁয়া নামজারি সৃজনের অভিযোগ

চরফ্যশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশনের চরমানিকা ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশীলদার)’র ও প্রভাবশালী ফরিদ উদ্দিনের ফাঁদে ৪০ বছরের ভোগ দখলীয় জমি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পরেছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নুরুল আমিন হাওলাদারের পরিবার। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মরুফ হোসেনের ভূয়া নামজারী সৃজনের ফলে উক্ত শিক্ষকের কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে। এ ব্যপারে রবিবার দুপুরে ভু ভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অবঃপ্রাপ্ত শিক্ষক নুরুল আমিন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, চরআইচা মৌজার ৫৫০ খতিয়ানের দাতা আবদুস সাত্তার তার ভোগদখলীয় জমি তিন ক্রেতার কাছে বিক্রির পর তার খতিয়ানে অবশিষ্ট দশমিক ৫০ শতাংশ জমি থাকলেও খতিয়ান গোপন করে আবদুস সাত্তার মাদ্রাসা শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের কাছে ওই খতিয়ানে আরও ৩১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। ফরিদ উদ্দিন  উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন এর সাথে আতাঁত করে ওই ভুতুরে দলিল দেখিয়ে ৩১ শতাংশ জমি নিজের নামে নামজারী করে নেন। ওই ভূয়া নামজারী দিয়ে ফরিদ উদ্দিন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নুরুল আমিন হাওলাদারের কোটি টাকা মূল্যের ৮২ শতাংশ জমি জবর দখল করে বাড়ি নির্মান কাজ শুরু করেন।
উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা(তহশীলদার)’র ও মাদ্রাসা শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের কারসাজিতে জবর দখল হওয়ার পর থানা পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে তার ভোগদখলীয় বে-হাত হওয়া জমি পুণঃদ্ধার চেয়ে প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
নুরুল আমিন হাওলাদার সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, ওই খতিয়ানে ১ একর ৪৬ শতাংশ জমির সম্মুখ অংশে রেকডীয় মালিক ছিলেন সানু মিয়ার ভাতিজা জনৈক আবদুস সাত্তার। যা থেকে আবদুস সাত্তার ১৯৯৬ সনে নুরুল আমিন মুন্সির কাছে সাড়ে ৬২ শতাংশ, ১৯৯৮ সনে শাহআলমের কাছে ৬২ শতাংশ এবং একই বছরে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে ২১ শতাংশ সহ মোট ১ একর ৪৫ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি সাব কাবলা বিক্রি করেন। সংশ্লিষ্ট তিন ক্রেতাই তাদের জমি নিজ নিজ নামে জমাখারিজ করে নেন। ফলে আবদুস সাত্তারের খতিয়ানে অবশিষ্ট জমি ছিল দশমিক ৫০ শতাংশ মাত্র। কিন্ত খতিয়ানে দশমিক ৫০ শতাংশ জমি থাকা অবস্থায় আবদুস সাত্তার ২০২১ সনে মাদ্রাসা শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের কাছে ৩১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন।
মাদ্রাসা শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন চরমানিকা ভূমি অফিসের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কর্মকর্তা মারুফ হোসেনকে ম্যানেজ করে জমির ভুতুড়ে দলিল দেখিয়ে তার নামে ৩১ শতাংশ জমি নামজারী করে নেন। এঘটনায় তিনি ২০২২সনের ২৭০-এফ/২০২১-২০২২ মিস কেইচের মাধ্যমে ফরিদ উদ্দিনের নামীয় নামজারী বাতিল চেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বরাবারে আবেদন করেন। যা এখন তদন্ত চলমান আছে। মিস কেইচ ও সার্ভেয়ারের তদন্ত চলমান থাকলেও ফরিদ উদ্দিন ৩১ শতাংশ জমির ভুতুরে দলিল ও নামজারী দিয়ে এখন তার ৪০ বছরের ভোগদখলীয় ৮২ শতাংশ জমি জবর দখল করে বাড়িঘর তৈরী করছেন। তার ভোদখলীয় জমি জবর দখলে বেহাত হওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পরেছেন তিনি এবং তার পরিবার।
ফরিদ উদ্দিন মাষ্টার বলেন, আমি জমি সাত্তারের কাছ থেকে ৩১শতক ক্রয় করছি। তারা ক্রয় করেছে শানুর কাছ থেকে ৮২শতক ক্রয় করেছেন। তারা তাদের জমি দখলে আছে, আমি আমার জমি দখলে আছি। নুরুল আমীনগংরা অহেতুক আমার সাথে ঝামেলা করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চর মানিকা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন সাগরকন্যাকে জানান, ভূল হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মিস কেইচ চলমান আছে। যেখানে পূর্ববর্তী মিসকেইচ বাতিল করে ফরিদ উদ্দনের নামে সৃজিত খতিয়ানটি বাতিলের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল মতিন খাঁন জানান, এবিষয়ে একটি মিস কেইচ চলমান আছে। ভূক্তভোগিদের কাগজ পত্র যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩০:১২ ● ৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ