কলাপাড়ায় উদ্ধারকৃত খাল ফের বে-দখলের শঙ্কা!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় উদ্ধারকৃত খাল ফের বে-দখলের শঙ্কা!
রবিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২২


কলাপাড়ায় উদ্ধারকৃত খাল ফের বে-দখলের শঙ্কা!

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে উদ্ধারকৃত খাল ফের দখলের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষের জীবীকা নির্বাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস পাখিমারা ক্লোজার খাল। এ খালে মাছ ধরে অনেক জেলেদের সংসার চলে। কৃষকের জমিতে সেচ থেকে শুরু করে গৃহিনীদের রান্না ঘরে পানি ব্যাবহার করেন থাকেন। ওই খালের উপর নজর পরেছে একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহলের। তারা আবাদি খালটিকে অনাবাদি দেখিয়ে লিজ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা খালের দুই জায়গায় জাল দিয়ে খালটিকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টাও করেছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেই জাল সরিয়ে নিলেও পুন:রায় দখলের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে ধারনা করছেন অনেকেই। অতিদ্রুত খালটিকে সম্পূর্ন অবমুক্ত করে সেখানে একটি সাইনবোর্ড দিয়ে জনসাধারনের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার দাবী জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা ক্লোজার খালটি দীর্ঘ বছর ধরে সাধারন মানুষের জীবীকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পূর্ব সোনাতলা ও কুমিরমারা বাঁধঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে নবীপুর ডাকুয়া বাড়ী পর্যন্ত খালটি বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৮.৫ কি.মি ও প্রস্থ এভারেজে ৫০০ ফিট। খালটির দুপাশে ১৯ টি গ্রামের প্রায় ১৮ হাজার লোকের বসবাস রয়েছে। ৪২ বর্গমাইলের ইউনিয়নটিতে মোট ৬৬৩৩ হেক্টর ভূমির মধ্যে ৪১০০ হেক্টর ভূমি রয়েছে আবাদি।
এই ইউনিয়নের প্রায় নব্বই শতাংশ লোক জেলে ও কৃষক। নিলগঞ্জ ইউনিয়নে উৎপাদিত কৃষি ও সবজি পন্য স্থানীয়দের চাহিদা পূরন করে পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে আসছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি উৎপাদন করে অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন এখানকার কৃষকরা। আর এসকল কৃষকের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হলো পাখিমারা ক্লোজার খাল। খালের পানি হাতের নাগালে থাকায় সেচ কাজে ব্যবহার করে সহজেই তারা কৃষিকাজ সমপন্ন করতে পারছে। উৎপাদিত এসকল কৃষি পন্য বাজারজাত করার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে খালটি। আবার অনেক জেলে রয়েছে যাদের একটি জালই হচ্ছে সম্ভল। খাল থেকে মাছ ধরে তারা জীবীকা নির্বাহ করে আসছে। অথচ এই খালটি অবরুদ্ধ করার জন্য উঠে পরে লেগেছে স্থানীয় একটি কু-চক্রি মহল। তারা আবাদি খালটিকে অনাবাদি দেখিয়ে নিজেদের আয়ত্বে নেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। এ মহলটি খালের ৪৭ একর ইজারা নিয়ে দুই প্রান্তে জাল দিয়ে সম্পূর্ণ খালটি অবরুদ্ধও করেছিল। স্থানীয় লোকদের বাঁধায় প্রশাসন এসে সেই জাল তুলে ফেলে।
স্থানীয় কৃষক জাকির হোসেন (লুঙ্গি জাকির), সোবাহান খন্দকার ও মো. আনোয়ার সিকদার বলেন, খালটির পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করে থাকি। অনেকে মাছ ধরে তাদের জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। তাই আমাদের জীবীকা নির্বাহের খালটি সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মোক্ত রাখার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া বলেন, পাখিমারা ক্লোজার খালসহ ওই ইউনিয়নে যতগুলো খাল ইজা দেয়া হয়েছে সবগুলো খালের ইজারা বাতিল করা উচিত। এতে স্থানীয় কৃষক ও জেলেসহ সকলের সুবিধা হয়।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, সরকারি খাল অবরুদ্ধ করার সুযোগ নেই। খুব শিঘ্রই তাদের ইজাকৃত ৪৭ একর বুঝিয়ে দিয়ে খালটি সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

এসকেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৮:৫১ ● ১২৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ