আমতলীতে জলকপাট আটকে মাছ শিকারে জলাবদ্ধতা!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে জলকপাট আটকে মাছ শিকারে জলাবদ্ধতা!
রবিবার ● ১ আগস্ট ২০২১


আমতলীতে জলকপাট আটকে মাছ শিকারে জলাবদ্ধতা!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

জলকপাট (স্লুইজগেট) আটকে মাছ শিকার করায় পর্যাপ্ত পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় এক হাজার ৯’শ ২৯ হেক্টর জমির আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে থাকায় বীজ পঁচে যাচ্ছে। দ্রুত জলকপাট খুলে পানি নিস্কাশনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
জানাগেছে, বঙ্গোপসাগরের লঘু চাপের প্রভাবে গত চার দিন বিরামহীন বৃষ্টিতে আমতলী উপজেলায় তীব্র জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়। জলকপাট (স্লুইজগেট) দিয়ে পর্যাপ্ত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে গেলেও জলাবদ্ধতা কমেনি। জলাবদ্ধতায় আমনের বীজ পঁচে যাচ্ছে। উপজেলার খেকুয়ানী,গুলিশাখালী,  গোজখালী, আঙ্গুলকাটা, মহিষকাটা, আমড়াগাছিয়া, চাউলা, ডালাচারা, কেওয়াবুনিয়া, টেপুরা, সোনাউঠা, ঘুঘুমারী, জোলেখা, পশুরবুনিয়া, আমতলা ও বান্দ্রাসহ ৬৫ টি জলকপাট রয়েছে। ওই জলকপাটগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে মাছ শিকার করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ মাছ শিকারে দখলবাজরা ইচ্ছামত পানি নিস্কাশন করেছেন। এতে ওই জলকপাটগুলো দিয়ে পর্যাপ্ত পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে ভারী বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার চারদিনেও জলাবদ্ধতা কমেনি। এতে উপজেলার এক হাজার ৯’শ ২৯ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। পানির নীচে তলিয়ে থাকায় বীজ পঁচে যাচ্ছে।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের আমতলা জলকপাট দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী মাহবুব মাতবর ও মোস্তফা গাজী জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন। তারা জলকপাট দিয়ে পানি নিস্কাশন করছে না। এতে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর সোনাখালী, দক্ষিণ সোনাখালী, পশ্চিম সোনাখালী, আমতলা, চাউলা, গোডাঙ্গা, কাঠালতলা ও পশ্চিম আঠারোগাছিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে হলদিয়া ইউনিয়নের জোলেখা জলকপাট আটকে স্থানীয় খবির মোল্লা, মোকলেস ও কাঞ্চন খাঁন দখল করে জাল পেতে মাছ শিকার করছেন। ওই জলকপাট দিয়ে তেমন পানি নিস্কাশন হচ্ছে ন। ফলে হলদিয়া ইউনিয়নের অধিংকাংশ গ্রামে জলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, খবির মোল্লা, মোকলেস ও কাঞ্চন খাঁন জলকপাট আটকে জাল পেতে মাছ শিকার করছেন। তারা আরো বলেন, তাদের ইচ্ছামত তারা জলকপাট দিয়ে পানি নিস্কাশন করছেন। এতে জলাবদ্ধতা না কমায় আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচারা  গ্রামের কুটি মিয়া হাওলাদার বলেন,  হানিফা ও রুহুল মুন্সি, হেলাল খাঁন, আইউব আলী, শুনু ফকির, মতলেব মৃধা ও সেফাজ গাজী ডালাচারা ও গুলিশাখালী জলকপাট আটকে মাছ শিকার করছেন। এতে ওই জলকপাট দিয়ে তেমন পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার উপজেলার গুলিশাখালী, আঠারোগাছিয়া, আড়াপাঙ্গাশিয়া, আমতলী সদর, হলদিয়া ও চাওড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। পানির সাথে সাথে বীজ ভাসছে। আমতলা, ডালাচারা, গুলিশাখালী ও জোলেখা জলকপাট বন্ধ রয়েছে।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, আমতলা জলকপাট আটকে মাছ শিকার করায় তেমন পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে আমনের বীজতলা পানির নীজে তলিয়ে রয়েছে।
হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক শিবলী শরীফ ও নিজাম বলেন, জোলেখার স্লুইজে জাল পেতে মাছ শিকার করায় পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে বীজতলা পঁচে যাচ্ছে।
আমতলা জলকপাট আটকে মাছ শিকারকারী মোঃ মোস্তফা গাজী বলেন, জলকপাট দিয়ে পর্যাপ্ত পানি নামছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, বৃষ্টিপাতে উপজেলার জলাদ্ধতায় এক হাজার ৯’শ ২৯ হেক্টর আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। গত চারদিনেই জলাবদ্ধতা কমেনি। এতে আমনের বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে থাকায় বীজ পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজমুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কৃষকের দুর্ভোগ লাঘবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৯:৪০ ● ৩৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ