বেতাগীতে ঝাড়ফুঁকে চিকিৎসার নামে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

প্রথম পাতা » বরগুনা » বেতাগীতে ঝাড়ফুঁকে চিকিৎসার নামে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
রবিবার ● ৩১ মে ২০২০


প্রতীকী ছবি

বেতাগী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার বেতাগীতে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে এক কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলার চিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী গ্রামের নারায়ন চন্দ্র শীলের পুত্র লক্ষীচন্দ্র শীলের বিরুদ্ধে। যুবলীগ ক্যাডার ভাই রবি চন্দ্র শীলের চাপে থানায় অভিযোগ দিতে বিলম্বের অভিযোগও করা হয়েছে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে একই গ্রামের এক কিশোরীকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে চিকিৎসার অজুহাতে কিশোরীর ঘরের পিছনের কক্ষে নিয়ে যায়। এতে সম্মুখ কক্ষে থাকা কিশোরীর মায়ের সন্দেহ হয়। কিছুক্ষণ পরে দেখে কিশোরীকে চিকিৎসার নামে তার স্পর্শকাতর অঙ্গের বিভিন্ন যায়গায় হাত দিয়ে মুখ চেপে ঝাপটে ধরে। এতে কিশোরী ও তার মা চিৎকার করলে লোকজন আসার পুর্বেই লক্ষী চন্দ্র শীল পাালিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানির পরপরই লক্ষীর ভাই ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এলাকায় ক্যাডার হিসেবে পরিচিত রবি চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে কতিপয় যুবক ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে এবিষয়ে কোথাও কোন অভিযোগ না দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে বলে জানান অসহায় কিশোরীর বাবা।
এদিকে এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, নারায়নচন্দ্র শীলের তিন ছেলে দির্ঘদিন যাবৎ এলাকায় ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসার নামে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত এবং নিরীহ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন নয়ন খান বলেন, ঘটনার পরে ইউপি সদস্য ছত্তার মল্লিক, রিয়াজ হোসেন, আলমগীর হোসেন ও বেতাগী থানার এসআই আমিনুল ইসলামসহ ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। বিচারের জন্য বৈঠকে বসলেও লক্ষীচন্দ্র শীল ও তার ভাই রবিচন্দ্র শীল সেখানে না আসায় বিচার করা সম্ভব হয়নি। এখন থানা আছে, তারাই বিচার করবে। ওদিকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ মৃধার নেতৃত্বে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমাজ সচেতন এলাকার অনেকেই। তারা বলেন, এলাকায় এর যদি বিচার না হয় সমাজে অপকর্ম বেড়েই যাবে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ মৃধা বলেন, সমঝোতার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। ইউপি সদস্য আব্দুস সত্তার মল্লিক বলেন, এরা এলাকায় সন্ত্রাস করে বেড়ায়, মেম্বার চেয়ারম্যান এদের কোন কাজে লাগে না। এব্যাপারে লক্ষী শীলের মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলেই সংযোগ কেটে দেন। বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, শনিবার ভুক্তভোগীর বাবা ও মা থানায় এসেছিল লিখিত অভিযোগ নিয়ে। অভিযোগ পত্রটি কাঁটাছিড়া থাকায় কম্পিউটার করে  আজ রবিবার জমা দিবে বলে গিয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নিব। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের চাপে সমঝোতা করতে বাধ্য হচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, সমঝোতা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।

এমএমকে/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৭:১৫ ● ১৬১৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ