বাউফলে ঝড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » বাউফলে ঝড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত
শুক্রবার ● ৮ মে ২০২০


বাউফলে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল-মাদরাসা… সাগরকন্যা

পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা বালিকা দাখিল মাদরাসা ও বগা ইউনয়নের সাবপুরা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাদরাসার পাঠদান ভবন বিধ্বস্তসহ টিনের চালা উড়ে গেছে এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি আধাপাকা ভবনের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ কালবৈশাখীর তাণ্ডবের শিকার হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টি। এছাড়া বিদ্যুৎ লাইনও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি বলে বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে ছয়হিস্যা বালিকা দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা হয়। মাদরাসাটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় তিনশ। পাঠদানের জন্য দুটি টিনসেড ভবন ছিল। যার একটি ভবন শুক্রবার রাতের আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ভবনটিতে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠদান করানো হত। যে টিনসেড ভবনটি আছে তাও খুবই জরাজীর্ণ। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। মাদরাসার সুপার আবদুর রব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নাজিরপুর ইউনিয়নে এমপিওভুক্ত ছয়টি মাদরাসা ও চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। তাঁর মাদরাসা ব্যতীত সব প্রতিষ্ঠানেই একাধিক পাকা ভবন আছে। অথচ তাঁর প্রতিষ্ঠানে জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করাতে হয়। একারণে কোনো ঝড় হলেই তাঁর প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাঠদান ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা বিঘ্নিত হয় বলেও দাবি করেন। তিনি মাদরাসাটিতে একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান।
এছাড়া কালবৈশাখীর তাণ্ডবে একই উপজেলার সাবুপুরা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির কয়েকটি কক্ষের চাল উড়ে গেছে। এরফলে বিদ্যালয়টির পাঁচ লক্ষাধিক টাকার অবকাঠামোসহ  অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের ক্ষতি হয়। বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণি কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও প্রধান শিক্ষকের কক্ষের চালা উড়িয়ে নিয়ে মাঠে ফেলেছে। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে থাকা শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র, সিসি ক্যামেরা ও একাধিক কম্পিউটার বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়টির ৫ লক্ষাধিক টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। এ বিদ্যালয়ে ৭ শতাধিক শিক্ষর্থী অধ্যায়ন করছে।
এদিকে ঝড়ে বাউফলে পল্লী বিদ্যুৎ লাইনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের বাউফল অফিসের ডিজিএম একে আজাদ জানিয়েছেন, ঝড়ে ১টি খুঁটি ভেঙ্গে এবং ৫টি খুঁটি হেলে পড়েছে। ৬টি ক্রস আর্ম, ১০টি ইনসুলেটর, ২১টি মিটার ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া ২টি ট্রান্সফরমার নস্ট এবং ১০৪টি স্পটে তারের ওপর গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে পড়েছে। এরফলে বাউফলের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ঝড়ের পর পরই পল্লী বিদ্যুতের দুর্যোগে আলোর গেরিলা  নামক ১১৩ জনের একটি দল কয়েকভাগে ভাগ হয়ে লাইন চেক করে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ডিজিএম একে আজাদ জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। তাই খোলার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে পাঠদানের উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:০২:৪২ ● ৩৯৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ