দুমকিতে নির্মাণের ৮মাসেই এলজিইডির সড়কে ধ্বস!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » দুমকিতে নির্মাণের ৮মাসেই এলজিইডির সড়কে ধ্বস!
শুক্রবার ● ২৭ অক্টোবর ২০২৩


দুমকিতে নির্মাণের ৮মাসেই এলজিইডির সড়কে ধ্বস!

দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর দুমকিতে নির্মাণের ৮মাস না পেরোতেই এলজিইডির সড়কে ধ্বস নেমেছে। ১কি.মিটার সড়কের একাধিক স্থান দেবে গেছে, কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্যো গর্তের। পাউবো’র আরসিসি স্লুইজসংলগ্ন স্থানে ১২ফুট প্রশস্ত সড়কের প্রায় ৮ফুটই ভেঙ্গে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল একগর্তের। এতে যানচলাচল বিচ্ছিন্ন হবার উপক্রম, ঝুঁকিনিয়ে চলাচল করছে আভ্যন্তরীণ সড়কের ইজিবাইক, রিস্কা-ভ্যান। যেকোন সময়ে পুরো সড়কটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে নির্মিত  সড়কটিতে  অবাধে মালামাল ভর্তি মাহেন্দ্রাসহ ভারী যানবাহনে ইট, বালু ও মাটি পরিবহনে এমন হাল হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার বোর্ড অফিস বাজারে পশ্চিম পাড়ে লেবুখালী বগা আরএইচডি সড়ক থেকে গাবতলী বাজার ভায়া ছালামপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (আইডি নং ৫৭৮৯৬৪০৪১) সড়কটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। রাস্তার কাজ শুরুতেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালীর মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ছিল স্থানীয়দের। কিন্ত এলজিইডির সরেজমিন সুপারভিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসও)’র যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়েই টেন্ডারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে চলে যান। ওই সময়ে পাশ্ববর্তী মুরাদিয়া ইউনিয়নে একই এসও’র তত্ত্বাবধানে অনুরূপ আরএকটি সড়কের নির্মাণ কাজের মালামাল পরিবহনে সদ্য নির্মিত এ কার্পেটিং সড়ক ব্যবহারের কারণেই এমন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা প্রকৌশল বিভাগে বার বার অভিযোগ করেও কোন সুফল আসেনি। উপজেলা প্রকৌশলী অবশ্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের জামাতের টাকায় সড়কটিকে মেরামতে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করলেও তদারকির দায়িত্বরত কর্মকর্তার (এসও) রহস্যজনক ভূমিকার কারণে থমকে গেছে। আরও এরকারনেই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সুবিধাভোগী বাসিন্দারা দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ জুয়েল তালুকদার বলেন, টেন্ডারের কোটেশন অনুসারেই কাজটি করতে হয়েছে। তবে নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী যে নিম্নমানের ছিল তার মোটেই সঠিক নেয়। মালামালের বর্ধিত মূল্য বিবেচনায় অফিস কর্মকর্তাদের সাজেশন ও পছন্দের মালামাল এনে কাজটি করেছিলাম। কিন্ত নুতন কার্পেটিং সড়কে ভারি মাহেন্দ্রা ও ট্রাকে মালামাল পরিবহনে রাস্তা ভেঙ্গে ফেলার খেসারত আমি কেন দেব? তিনি আরও বলেন, স্লুইস সংলগ্ন রাস্তার নীচে সুরঙ্গ হয়ে পানি ওঠানামা করার ফলে একসময় প্রাকৃতিক ভাবে ভেঙ্গেছে। এটা ডিপার্টমেন্টের বিষয়, এখানে ঠিকাদারকে দায়ী করার কোন আইনগত ভিত্তি নেই।
টেন্ডারের দায়িত্বরত এসও মোঃ সরাফত উল্লাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মেরামতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ভিন্ন কোন প্রকল্প দিয়ে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। কন্ট্রাক্টরের জামানত বাজেয়াপ্ত প্রশ্ন এড়িয়ে বলেন, প্রকৃতিগত ক্ষয়ক্ষতির জন্য ঠিকাদারকে দায়ী করা যাবে না। বরং ভিন্ন ভাবে করাই ভাল হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আজিজুল হক বলেন, প্রতিটি কাজের বিপরীতে একবছর ঠিকাদারের জামানত রাখার বিধান আছে। এর মধ্যে কাজের মান খারাপ হলে জামাতের টাকায় মেরামত করা হয়। উল্লেখিত সড়কটি যেহেতু বছরপার হয়নি, সেহেতু জামানত তুলে নিতে পারার কথা নয়। তা ছাড়া এসও’র সুপারিশও করার কথা নয়। এটা হয়ে থাকলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৪:১৮ ● ৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ