ইন্দুরকানীতে স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত!

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » ইন্দুরকানীতে স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত!
শনিবার ● ২১ অক্টোবর ২০২৩


ইন্দুরকানীতে স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত!

পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায়  ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের সভা কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ  দিয়েছেন।
জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলমগীর হোসেন অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে জুতা নিয়ে তেড়ে ওঠেন এমন একটি ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ওই ইউপি সদস্যের বিচারের দাবীতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১৮ অক্টোবর)  দুপুরে পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের সভা কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত  আলমগীর হোসেন উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়ন স্বেচ্ছা সেবকলীগের আহবায়ক ও ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। আর ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদার একই পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্হা ব্রাক কর্তৃক আয়োজিত বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ সমন্বয় সভা শেষ হয়। এসময় পরিষদের সকল ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে আলমগীর হোসেন হঠাৎ বশির মৃধার নাম কেন জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ এর চালের তালিকায় রাখা হয় নাই তা জিজ্ঞেস করেন পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে। তাঁর প্রশ্নের কোন উত্তর না দেয়ায় পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন আলমগীর। এসময় স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা আলমগীর হোসেন  তাঁর নিজ পায়ের জুতা খুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা  পরিতোষ চন্দ্রকে মারার জন্য তেড়ে ওঠেন। এমনকি তাঁকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ফেলে দিবে এবং ভারত পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদার বলেন, আলমগীর আমাকে যে ভাবে লাঞ্ছিত করেছে তাতে আমার আর কাউকে মুখ দেখাবার উপায় নাই। এই ঘটনায় যদি সঠিক বিচার না হয় তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদার জানান, ঘটনার সময় আমি পাশের কক্ষে ছিলাম। আলমগীর হোসেন এর হাক ডাক শুনে সভা কক্ষে এসে তাঁকে নিবৃত করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হই। এর আগেও সে আমার ৮-পরিষদের একাধিক সদস্য ও গ্রাম পুলিশের সাথে অসদাচরণ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, পরিতোষ চন্দ্র হালদার বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্হা নেয়া হবে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা আলমগীর হোসেন বলেন, পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে জুতা পেটা করতে চাই নাই। অহেতুক আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। মেম্বররা মানুষের কাছ থেকে চাল দেয়ার কথা বলে টাকা নিলে মানুষ আমাদেও জুতা দিয়ে পেটাবে বলেছি।
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি আল মামুন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্হা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।


আরএইচএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৩:৪৩ ● ৮৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ