চরমানিকা ইউপি‘র সার্ভার বন্ধ চরফ্যাশনে জন্ম-মৃত্যু সনদের ৬০লাখ টাকা আত্মসাৎ!

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চরমানিকা ইউপি‘র সার্ভার বন্ধ চরফ্যাশনে জন্ম-মৃত্যু সনদের ৬০লাখ টাকা আত্মসাৎ!
শনিবার ● ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


চরফ্যাশনে জন্ম-মৃত্যু সনদের ৬০লাখ টাকা আত্মসাৎ!

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নে জন্ম-মৃত্যু সনদে ৩০হাজার নারী-পুরুষ থেকে উদ্যাক্তা, চেয়ারম্যানের ছেলে কর্তৃক ৬০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিবন্ধন ফি জমা না দেয়ায় সার্ভার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দু‘জন রোহিঙ্গাকে ভোটার করার অপরাধে নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবকে কারণ দর্শনোর নোটিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, চরমানিকা ইউনিয়নে জন্ম-মৃত্যুর সনদ দেয়া হয়েছে প্রায় ৩০হাজারের মত। জনপ্রতি ২শ/২৫০টাকা নেয়ার অভিযোগ থাকলেও পরিষদের  উদ্যোক্তা মনির হোসেন ১শ‘ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইউনিক আইডি করার ও ভর্তি হতে হলে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। একটি বাচ্চার জন্ম সদন করতে হলে পিতা-মাতা মিলিয়ে ৩জনের করতে হয়। জনপ্রতি ২শ টাকা করে নেয়া হত ৬শ টাকা, উদ্যোক্তা স্বীকার করেছেন ১শ টাকা। ইউপি সচিস মো. ছিদ্দিকুর রহমানের অভিযোগ, জন্ম নিবন্ধনের পাসওয়ার্ড আমাকে দেয়া হয়নি। মনির হোসেন তার স্ত্রী ফাতমা আক্তার রুমির নামে আইডি খুলে সাধারন মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে জন্ম-মৃত্যু সনদ দেয়া হত। এমনকি আমার বাড়ী লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জে থাকলেও প্রতারণা করে আমাকে চরমানিকার জন্ম সনদ ২০ জানুয়ারী/২০২১ইং তারিখে ১৯৬৮০৯১২৫৪৭১০৩৮৯৯নং তৈয়ারী করে আইডি খুলে চালাতো তা আমি জানতাম না। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
কক্সবাজার জেলার উখিয়ার মোসাম্মদ জাকিয়া সুলতানা উর্মি ও মোহাম্মদ রিফাতুল করিম নামক দু‘জনের অনলাইনে চরমানিকা ইউপি থেকে জন্ম নিবন্ধণ করা হয়েছে। এই সংবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ্আল নোমান ৩৫০ স্মারকে চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ হাওলাদার ও সচিব ছিদ্দিকুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তারা জবাব দিয়েছেন।
চরমানিকা ইউপির উদ্যোক্তা মো. মনির হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীর নামে আইডি দিয়ে পাসওয়ার্ড খুলে জন্ম সনদ কাজ চলছে তা ঠিক ্আছে। আমি সচিবকে অবগত করিয়ে কাজ করছি এবং সরকারি ফি বাবৎ ২লাখ ৬৩হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। তা সচিব ছিদ্দিকুর রহমান জমা প্রদান করেন নি। ফলে এখন জন্ম মৃত্যু সনদ করা যাচ্ছেনা।
এদিকে স্থাণীয়দের অভিযোগ, সিদ্দিকুর রহমান চর মানিকা থেকে আগস্ট/২০২২ বদলী হয়ে লালমোহনের বদরপুরে বদলী হয়ে চলে গেছেন। ৭মাস অতিবাহিত হওয়ায় শাক দিয়ে মাছ ডাকার জন্যে সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
ইউপির চেয়ারম্যানের পুত্র মো. তুহিন বলেন, টাকা বকেয়া থাকায় জন্ম নিবন্ধণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এদিকে চরফ্যাশন উপজেলার একাধিক সচিবের ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড সচিবদেরকে দেয়া হয়না। চেয়ারম্যানের আত্মিয়-স্বজন ও নিজস্ব লোক দিয়ে জন্ম নিবন্ধন করান। জবাব দিহিতার বিষয়টি থাকে সচিবের। জনৈক সচিব বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে জিম্মি। তাদের ভয়ে কাজ করতে পারিনা।
চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শফিউল্লাহ হাওলাদার সাগরকন্যাকে বলেন, নিবন্ধনের সরকারি ফি সিদ্দিকুর রহমানের হাতে তুলে না দিলেই আমাকে জানাতেন তিনি। পরে মনিরকে জানালে সে সরকারি ফি সচিবের হাতে তুলে দিত। অথচ সরকারি কোষাগারে ওই টাকা জমা না দিয়ে সচিব নিজেই আত্মসাৎ করায় এখন অনলাইন সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। আমার ইউনিয়নবাসীকে সেবা বঞ্চিত করে ২০২২ সালের আগস্টে সচিব বদলী হয়ে বদরপুর চলে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সচিব সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি কোন অনলাইনে যথ নিবন্ধন হয়েছে কখনও আমার স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। তার প্রমাণ জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র খোঁজলে প্রমাণ মিলবে। কোনও টাকাও নেইনি।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান বলেন, ইউপি সচিব সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:০১:১৪ ● ২৭৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ