গৌরনদীতে বিএনপি নেতা ইশরাক’র গাড়ী বহরে হামলা, আটক-৭

প্রথম পাতা » বরিশাল » গৌরনদীতে বিএনপি নেতা ইশরাক’র গাড়ী বহরে হামলা, আটক-৭
শনিবার ● ৫ নভেম্বর ২০২২


গৌরনদীতে বিএনপি নেতা ইশরাক’র গাড়ী বহরে হামলা, আটক-৭

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া এলাকায় শনিবার (৫ নভেম্বর) সকালে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির নয়জন নেতাকর্মী আহত হয়। পরবর্তীতে ইশরাকের গাড়ি বহরে থাকা নেতাকর্মীরা পাল্টা হামলা চালায়।
এ সময় গাড়ি বহরের আটটি গাড়ি ভাংচুর ও পাল্টা হামলায় আটটি মোটরসাইকেল ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুরসহ যুবলীগের ছয় নেতাকর্মী আহত হয়েছে। একইদিন সকালে একইস্থানে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেত্রীদের বহনকারী গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে বরিশালে যেতে দেয়া হয়নি। গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ড থেকে তার গাড়ি ঢাকার দিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে।
গাড়িবহরে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সমাবেশগুলোতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ সরকারকে ভীত করেছে। গণজোয়ার আটকাতে না পেরে সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ দিয়ে বাঁধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা দমে যাবার নেতা নই। সকল বাঁধা মোকাবেলা করে সমাবেশস্থলে এসেছি।
শনিবার সকালে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশের উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকা থেকে গাড়ি বহর নিয়ে যাত্রা করেন। পথে পথে তার গাড়ি বহরটি ব্যাপক বাঁধার শিকার হয়। একসময় গাড়ি বহরটি বরিশালের কাছাকাছি গৌরনদীর মাহিলাড়া বাজারে পৌঁছালে সেখানে যুবলীগের কতিপয় নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
হামলায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অক্ষত থাকলেও ভাংচুর করা হয় তার পেছনে থাকা তারই বহরের আটটি গাড়ি। হামলায় গাড়িবহরে থাকা ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির ৩৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল হক সহিদ, বিএনপি নেতা মামুন ভূঁইয়া রকি, মোঃ রাসেল, বাবুল হোসেন ও খোকন, ৪০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ইমরান হোসেন, ৪২নং ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদ রানা এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল নেতা রকি ও আল আমিন আহত হয়েছেন।
একপর্যায়ে গাড়ি বহরের লোকজন নেমে সরকার দলীয় হামলাকারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। ওই হামলায় প্রায় আটটি মোটরসাইকেল ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় যুবলীগের ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের পাল্টা হামলায় গুরুতর আহত মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বিলাশ কবিরাজকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যুবলীগ নেতা জানান, ইশরাক হোসেনের গাড়িবহর মাহিলাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকা অতিক্রমকালে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে নানা শ্লোগান দিতে থাকে। এসময় তাদের নিষেধ করায় বহরের গাড়ি থেকে নেমে রড ও লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামলা চালিয়ে স্থানীয় দলীয় কার্যালয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছবি ভাংচুর করা হয়।
অপরদিকে বিএনপি নেতাদের হামলায় যুবলীগ নেতাকর্মী আহত ও দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে শনিবার সকালে মাহিলাড়া বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বরিশালের বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে বাঁধার শিকার হন। সেখানে ৫০/৬০ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার গাড়ি থামিয়ে হামলার হুমকি দিয়ে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে গাড়ি ঘুরিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফিরে দেয়।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসের চেয়ার, টেবিল ভাংচুরের অভিযোগে বিএনপির নেতা ইশরাত হোসেনকে প্রধান আসামি করে বিএনপির একশত এক নেতাকর্মীর বিরোদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করছে। এ মামলায় বিএনপির সাত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাহিলাড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

এআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৫৫:৩০ ● ৯৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ