নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ- চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে জ্বলছে বিদ্যুতের আলো!

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ- চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে জ্বলছে বিদ্যুতের আলো!
শনিবার ● ৯ এপ্রিল ২০২২


 নদীর তলদিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ

আমির হোসেন, চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে॥

সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বুড়া গৌরাঙ্গ এবং তেঁতুলিয়া নদীরতলদেশ দিয়ে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুর্গম দ্বীপ ইউনিয়ন মুজিবনগর ও কুকরি-মুকরিতে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। ফলে দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৪৪হাজার মানুষ বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ-সংযোগে চরাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে বিচ্ছিন্ন কুকরি ও মুজিবনগর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ-সংযোগের মধ্য দিয়ে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এল।
ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্যমতে, উপজেলার চর কুকরি-মুকরি ও মুজিবনগরে ১০এমভিএ ২টি উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বুড়া-গৌড়াঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে সাব-মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে পর্যটন দ্বীপ কুকরি-মুকরি, মুজিব নগর ইউনিয়ন এবং সংলগ্ন গলাচিপা উপজেলার চর কাজল, চর বিশ্বাস ও চর বোরহান ইউনিয়নের মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে কুকরি-মুকরির ২হাজার, মুজিবনগরের ৪হাজার, চর কাজল ও চর বিশ্বাসে ৮হাজার এবং চর বোরহানে ৩হাজার গ্রাহককে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
চর কুকরির মাছ ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুতায়নের ফলে মাছ সংরক্ষণ ও আগাম আবহাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আগে আমরা ডিজিটাল যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। এখন বিদ্যুৎ থাকায় শহরের মানুষের মতো সব সুবিধা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসছে।’
মুজিবনগরের বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, ‘দুর্গম এবং বিচ্ছিন্ন এই চরে ডিশ সংযোগ, ফ্রিজ ও টিভি চালানের কথা ৫বছর আগেও কেউ ভাবেন নি। এখন বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, যা চরের মানুষকে শহরের সুবিধা দিচ্ছে। রাতে বিদ্যুৎতের আলো গ্রামের বাড়িগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো শহর।
কুকরি-মুকরি ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘কুকরিতে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ায় এখানকার পর্যটন শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় বিদ্যুৎ নির্ভর কৃষি কাজের বিকাশ শুরু হবে। বিশেষ করে কৃষি পণ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামার ও তথ প্রবাহ নির্বিঘœ হয়েছে।
ভোলা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘চরের বাসিন্দারা দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। অফ গ্রিড এলাকার মানুষ সহজে বিদ্যুৎ পেয়ে আনন্দিত। আর এ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে চরের মানুষের জীবন মানের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যের একান্ত প্রচেষ্টায় বিছিন্ন দ্বীপ মজিবনগর ও পর্যটন এলাকা চর কুকরি মুকরি এখন বিদ্যুতের ্আলোতে আলোকিত হচ্ছে। দূর্গম এলাকার সাধারন মানুষ বিদ্যুৎ পেয়ে আনন্দ উপভোগ করেছেন।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৫৯:৪২ ● ৪১৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ