আমতলীতে বিধবাকে ধর্ষণ চেষ্টা ৩হাজার টাকায় রফা!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে বিধবাকে ধর্ষণ চেষ্টা ৩হাজার টাকায় রফা!
মঙ্গলবার ● ২০ এপ্রিল ২০২১


আমতলীতে বিধবাকে ধর্ষণ চেষ্টা ৩হাজার টাকায় রফা!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

এক বিধবা নারীকে কাঠ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ধর্ষণ চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশ সদস্য সোহরাফ হোসেন ওই বিধবা নারীর হাতে তিন হাজার টাকা তুলে দিয়ে থানায় যেতে নিষেধ করেন। এমন অভিযোগ ওই বিধবা নারীর। ওই নারীকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী গ্রামে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলেছে।
জানাগেছে, উপজেলার উত্তর টিয়াখালী গ্রামের এক বিধবা দুই কন্যা নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। আমতলী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক সড়কে সবুজ বেষ্টনীর গাছ কাটতে আসা ঠিকাদার পিন্স তালুকদার রিপনের মামাতো ভাই জাকির হোসেন প্রায়ই ওই বিধবাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। কিন্তু জাকিরের প্রস্তাবে বিধবা রাজি হয়নি। মঙ্গলবার দুপুরে জাকির ওই বাড়ীতে প্রবেশ করে বিধবাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় বিধবার ডাক চিৎকারে তার বোন ছুটে এলে জাকির পালিয়ে যায়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ওই বিধবা পুলিশে খবর দেয়। আমতলী থানার উপ পরিদর্শক মোঃ শহীদুল আলমের নেতৃত্বে তিন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায়। তারা গিয়ে ওই বিধবাকে বিচার না করে উল্টো তিরস্কার করে। পরে পুলিশ সদস্য সোহরাফ হোসেন ওই বিধবার হাতে তিন হাজার টাকা তুলে দিয়ে ঘটনা কাউকে না জানাতে শাসিয়ে  দেন। কিন্তু বিধবা এতে শান্ত হয়নি। ওইদিন বিকেলে বিধবা আমতলী থানায় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, তার সহযোগী প্রিন্স তালুকদার রিপন ও আহসানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে প্রভাবশালী ঠিকাদার প্রিন্স তালুকদার রিপন ও আহসান বখাটে জাকির হোসেনকে রক্ষায় উঠেপরে নেমেছেন।
বিধবা নারী কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, জাকির গাছ কাটতে গিয়ে গত এক মাস ধরে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে জাকির আমাকে টাকার প্রলোভন দেয়। আমি তাতেও রাজি হয়নি। মঙ্গলবার জাকির আমার ঘরে প্রবেশ করে আমাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায় এবং আমার পড়নের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলে। তিনি আরো বলেন, আমি পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের তিন সদস্য গিয়ে আমাকে তিরস্কার করে এবং পুলিশ সদস্য সোহরাফ হোসেন তিন হাজার টাকা আমার হাতে তুলে দিয়ে থানায় যেতে নিষেধ করে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
বিধবা নারীর ছোট বোন বলেন, আপার ডাক চিৎকার শুনে আমি এসে দেখি জাকির নামের এক লোক আপার সাথে ধস্তাধস্তি করছে। আমার আসার টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের মামাতো ভাই ঠিকাদার প্রিন্স তালুকদার রিপন বলেন, এ ঘটনা আমার জানা নেই।  আমতলী থানার উপ পরিদর্শক মোঃ শহীদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মার্জিয়া তাজিন বলেন, ওই বিধবা নারীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৪:০৫ ● ৭১৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ