পৌরসভা নির্বাচন-কুয়াকাটায় সম্ভাব্য মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ

প্রথম পাতা » কুয়াকাটা » পৌরসভা নির্বাচন-কুয়াকাটায় সম্ভাব্য মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ
মঙ্গলবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২০


কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ

কুয়াকাটা সাগরকন্যা অফিস॥

 

 

পর্যটন নগরী কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দলীয় সমর্থন পেতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। সম্ভাব্য প্রার্থীরা রঙ্গিন ব্যানার ও পোষ্টার সাঁটানো এবং সমাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্টানে যোগদান করছেন। তারা তাদের প্রত্যাশার কথা প্রকাশ করছেন। ইতোমধ্যে ভোটাররাও শুরু করেছেন চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষন। কাকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে-এমন ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করার পক্ষে বেশির ভাগ ভোটার অভিমত প্রকাশ করেছেন। মেয়র প্রার্থীরা দলের টিকিট পেতে জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃস্থানীয়দের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। সেই সাথে চালাচ্ছেন জোর গ্রুপিং-লবিং। এদিকে কে কোন দলের মনোনয়ন পাবেন আর কে মেয়র হচ্ছেন ভোটারদের মাঝে এমন সব আলোচনা পর্যালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার চা স্টল গুলো। তবে শেষ পর্যন্ত দু’দলের কার মাথায় উঠবে দলীয় মনোনয়নের মুকুট সেটিই দেখার অপেক্ষায় কুয়াকাটা পৌরবাসী। সবকিছু মিলিয়ে সাগরপাড়ের এ জনপদের পৌর নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বইছে। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মেয়র প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলেও বিএনপির প্রার্থী সংকটে রয়েছে। তফসিল ঘোষনার আগে সব দলের ব্যানার ফেস্টুনও পোস্টারে সমগ্র কুয়াকাটা সয়লাব হলেও বিএনপি এসব বিষয়ে আভাস মিলেনি।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানা গেছে, বিএনপি একক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামবেন। নৌকার মনোনয়ন পেলেই বিজয় সুনিশ্চিত এমন ধারণা থেকে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। ফলে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া সেইসব নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়িসহ অভিযোগের পাহাড় গড়ছেন। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এবারের কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে কৌশলী হয়ে মাঠে কাজ করবে বলে দলীয় সুত্রে আভাস মিলেছে। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে হাফ ডজন নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে নানা তদবির চালাচ্ছেন। তারা হলেন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ: বারেক মোল্লা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান টিটু, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি গাজী মো.ইউসুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মোঃ শাহ আলম হাওলাদার এবং অপর সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু অনন্ত মুখার্জী মাঠে রয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কয়েকটি বলয় তৈরী হয়েছে। দ্বিধাবিভক্তি রয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমেও। একই সাথে বিগত পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে মাঠে থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মনির আহম্মেদ ভ্ুঁইয়া এবারও শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে হাজী নুরুল ইসলাম হাওলাদারের। তিনি বিগত পৌর নির্বাচনেও পাখা প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন। এতসবের মাঝে সব দলের ভোট ব্যাংকে আঘাত হানতে পারেন জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া মো: আনোয়ার হাওলাদার। তিনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে ভোটারদের অভিমত। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক রেষারেষিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সুবিধা নিতে পারেন বলে মন্তব্য ছিল অনেকের। আনোয়ার হাওলাদার বিগত নির্বাচনে জাতীয় পাটি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এছাড়া বিএনপির দলীয় কার্যক্রম থেকে দূরে থাকায় প্রার্থী সংকটে রয়েছে বলে মন্তব্য ছিল সমালোচকদের। গত নির্বাচনে অংশ নেয়া পৌর বিএনপির আহবায়ক আ: আজিজ মুসুল্লী বার্ধক্য সমস্যায় ভুগছেন বলে পারিবারিক  সূত্রে জানা গেছে।
কুয়াকাটা পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভা যাত্রা শুরু হয় ১৫ডিসেম্বর ২০১০সালে। ৯টি ওর্য়াড নিয়ে গঠিত পৌরসভার আয়তন ১২,৭৫ বর্গ কিলোমিটার। গ্রাম রয়েছে ২৫টি। বর্তমান জনসংখ্যা ৫০১২৭.০০জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২০০০ হাজার। ২০১১ সালে ৩৪ নং লতাচাপলী মৌজার ১১৪০দশমিক ৫৫একর জায়গা নিয়ে পৌরসভাটি পুর্নমর্যাদা লাভ করে। এরপর থেকেই পৌরসভার কার্যক্রম চলে আসছিল নির্বাচিত মেয়র দিয়ে। বর্তমানে ১২,৭৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বারো হাজার ভোটার নিয়ে হতে যাছে নির্বাচন।
কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হুমায়ুন সিকদার বলেন, বিএনপিতে প্রার্থী সংকট নেই। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা পর  একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকবেন।
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলএবং কুয়াকাটার উন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার।

বিভিন্ন সূত্রমতে জানা যায় , একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারে, তবে তৃর্ণমূলের ভোটের ভিত্তিতে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তিনিই নির্বাচন করবে। তার বাইরে কেউ প্রার্থীতা দিলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত শেষে পাল্টে  যেতে পারে অনেক হিসেব-নিকেশ ।

এমবি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:২১:২০ ● ৭৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ