রাবনাবাদ পাড়ের ৬শ’ পরিবারের চুলায় হাঁড়ি ওঠেনি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » রাবনাবাদ পাড়ের ৬শ’ পরিবারের চুলায় হাঁড়ি ওঠেনি
বৃহস্পতিবার ● ২০ আগস্ট ২০২০


রাবনাবাদ পাড়ের ৬শ’ পরিবারের চুলায় হাঁড়ি বসেনি

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥

পশুরবুনিয়া গ্রামের জেলে বধূ আনোয়ারা জানালেন, বুধবার দুপুরে চুলায় হাঁড়ি ওঠেনি। শেষ বিকেলে একটি আলগা চুলায় ভাত আর কচু শাক রান্না করে খেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত চলেছে ওই খাবার দিয়ে। দুপুরে মাঝের হাওলা গ্রামে নৌবাহিনীর দেয়া ত্রাণসহায়তা পেয়েছেন এই নারী।
জানালেন, কালকের চেয়ে আজ বৃহস্পতিবারের অবস্থা আরও খারাপ। স্বামী লিটন ফরাজীকে নিয়ে চারজনের সংসারে চরম বেহাল দশায় পড়েছেন। এমনতর অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস এরা আগে কখনও দেখেননি। আমফানোর সময়ও এমন দুর্ভোগ হয়নি বলে দাবি আনোয়ারা-লিটন দম্পতির। বৃহস্পতিবারেও রান্নার উপায় নেই। একই ভাষ্য মোর্শেদা বেগমের। রাবনাবাদ পাড়ের পশুরবুনিয়া গ্রামে বাড়ি এদের। ওই গ্রামের সেলিম ফরাজি, রাসেল মিয়া, জাহাঙ্গীর, জসিম, হোসেন জানালেন শত শত পরিবারের বাড়িঘর, পুকুর, রাস্তাঘাট সব বুক সমান পানিতে ভাসছে। তিন দিন ধরে এমন দশা। একই দশা বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা জনপদ চারিপাড়ার চার শ’ পরিবারের। এরা ফি-দিন কেউ না কেউ বাড়িঘর ছেড়ে সংলগ্ন বানাতিবাজারে আশ্রয় নিচ্ছেন। ইউপি মেম্বার ইউনুচ ফরাজী জানালেন, পশুরবুনিয়া ও চারিপাড়ার কমপক্ষে পাঁচ শ’ পরিবারের চুলা জ¦লেনি দুইদিন দুপুরে। এসব মানুষ এক কলসী নিরাপদ পানির জন্য ছুটছে উচু জায়গায়। গভীর নলকূপ পর্যন্ত ডুবে গেছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার দুপুরে চারিপাড়ার অন্তত দুই শ’ মানুষ উপায় না পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে উঠেছে। চারিপাড়া গ্রামের শ্রমজীবী দম্পতি রিপা-হাশেম জানান, চারদফা জোয়ারের চাপে বৃহস্পতিবার দুপুওে বসত ঘরটিও কাঁত হয়ে পড়ে গেছে। ঘরে চাল-ডাল যা ছিল সব নষ্ট হয়ে গেছে। ডুবে গেছে পানিতে।
স্থানীয় মেম্বার রবিউল ইসলাম জানান, চারিপাড়া, নয়াকাটা, চৌধুরীপাড়া গ্রামের পাঁচ/ ছয় শ’ পরিবার দুপুরে রান্না তো দুরের কথা না খেয়ে থাকতে হয়েছে। এসব মানুষ কী করবে তাও ভেবে পাচ্ছেন না। স্থানীয়রা জানান, এমন জলোচ্ছ্বাস তারা আগে কখনও দেখেননি। লালুয়া ইউনিয়নের সচিব রাশেদ নিজাম জানান, ইউনিয়নের ২১ টি গ্রামের মেরাউপাড়াসহ তিনটি গ্রাম ছাড়া সব আজকের বৃহস্পতিবারের জোয়ারে ডুবে গেছে। তিনি এও জানান, কোন অমাবস্যা কিংবা পুর্ণিমার জোতে ২০ বছরে তিনি এতো বেশি জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস দেখেননি। এসব এলাকার মানুষকে শুকনো খাবার সরবরাহ করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন পানিবন্দী দশার মানুষ।

এমইউএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৮:৩৬ ● ৬৫১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ