আমতলীতে মহাসড়কে ড্রেনেজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে মহাসড়কে ড্রেনেজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম
সোমবার ● ২৯ জুন ২০২০


---

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তা বক্স কালভার্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত তিন’শ ৭৩ মিটার ড্রেনেজ নির্মাণ কাজে অনিয়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাক্কলন অনুসারে কাজ না করায় পানি নিস্কাশন বন্ধ রয়েছে। ড্রেনেজে পানি জমে ভরে গেছে। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ময়না-আবর্জনায় ভরে পঁচা দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ড্রেনেজের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। পঁচা দূর্গন্ধে এলাকায় বসবাস অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। দ্রুত এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ বছর জানুয়ারি মাসে আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তা বক্স কালভার্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত তিন’শ ৭৩ মিটার ড্রেনেজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করে। ওই ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ পায় মির্জাগঞ্জের ঠিকাদার বারেক মিয়া। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ড্রেনেজ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মহাসড়কের দুই পাশে তিন’শ ৭৩ মিটার দৈর্ঘ্য, তিন ফুট প্রস্থ ও তিন ফুট গভীর এ ড্রেনেজটি। ড্রেনেজ নির্মাণ কাজ শুরুতেই তিনি প্রাক্কলন অনুসারে কাজ করেনি। দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ঠিক থাকলেও ড্রেনেজের গভীরতা ঠিক নেই। এছাড়াও নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তিনি কাজ করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয় লোকজন কাজের শুরুতে ঠিকাদারের এ অনিয়মের বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশন প্রকৌশলী মোঃ বেলায়েত হোসেনকে জানালেও তিনি কোন কর্নপাত করেননি। উল্টো তিনি তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে ড্রেনেজ দিয়ে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না বলে জানান স্থানীয়রা। ড্রেনেজের মধ্যে পানি ও ময়লা জমে পঁচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত এ ড্রেনেজ সংস্কার করা না হলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশন প্রকৌশলী মোঃ বেলায়েত হোসেন ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে নি¤œমানের সামগ্রী ও প্রাক্কলন অনুসারে কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ড্রেনেজ দিয়ে পানি নামছে না। ড্রেনেজে পানি ও ময়লা আবর্জনায় ভরা। ড্রেনেজ থেকে পঁচা দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে। ড্রেনেজের দু’পাশের ব্যবসায়ীরা খুবই কষ্টে ব্যবসা প্রতিষ্টান চালাচ্ছেন।
আমতলী চৌরাস্তার ফল ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, এটা ড্রেনেজ করা হয়নি, ময়লার বাগার করা হয়েছে। ড্রেনেজ দিয়ে কোন পানি নামছে না। পঁচা দুর্গন্ধে আমাদের টিকে থাকা কষ্টসাধ্য। ড্রেনেজে পানিতে ভরে আছে। দ্রুত ড্রেনেজ সংস্কারের দাবী জানাই।
বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজসে প্রাক্কলন অনুসারে কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিকল্পনা অনুসারে ড্রেনেজ না করায় পানি নিস্কাশন বন্ধ রয়েছে। ড্রেনেজ দিয়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। এখন পঁচা দূর্গন্ধে এলাকায় বসবাস করা কষ্টসাধ্য ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, এটাকে কোন ড্রেনেজ বলা যায় না। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট করেছে। এ ড্রেনেজ দিয়ে আমতলীবাসীর কোন কাজে আসবে না। ড্রেনেজ নির্মাণের অনিয়মের সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মোঃ বারেক মিয়ার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশন প্রকৌশলী মোঃ বেলায়েত হোসেন ড্রেনেজ নির্মাণের অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ড্রেনেজ দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না সেটি আমি সরেজমিনে পরির্দশনে গিয়ে দেখেছি। ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রেনেজ সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি  সংস্কার না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এইচএকে/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫২:১৩ ● ৩৫৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ