
পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী তাপস কুমার দাস হত্যা মামলায় প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমানকে আক্রোশ ও হয়রানিমূলক আসামি করার প্রতিবাদে ও মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতির দাবিতে বৃহস্পতিবার পাথরঘাটায় মানববন্ধন হয়েছে।
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বেলা ১১টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় সাংবাদিক, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তর প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন প্রথম আলোর পাথরঘাটা প্রতিনিধি আমিন সোহেল, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সমকাল প্রতিনিধি ইমাম হোসেন, ভোরের কাগজ প্রতিনিধি অমল তালুকদার, মানবজমিন প্রতিনিধি জাকির হোসেন খান প্রমুখ। বক্তারা তাপস হত্যা মামলায় মিজানকে আক্রোশ ও হয়রানিমূলক আসামি করায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন,‘ঘটনার সময় অন্যান্য সাংবাদিকদের সঙ্গে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যার ভিডিও সাংবাদিক ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে সংরক্ষনে আছে। অথচ ওই হত্যা মামলায় সাংবাদিক মিজানকে আসামি করা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি স্বরুপ।বক্তারা অবিলম্বে মামলা থেকে সাংবাদিক মিজানকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন।’ তিনি আরও বলেন,ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি সাংবাদিক মিজানসহ নিরপরাধ কেউ যেন এই মামলায় হয়রানির শিকার না হন, তা দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি করছি। সাংবাদিক ইমাম হোসেন বলেন,‘সাংবাদিক মিজান সরকারের প্রভাবশালী মহলের বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় এর আগেও চাঁদাবাজি, ছিনতাই, লুট, মারামারি ও ধর্ষণসহ হয়রানিমূলক ছয়টি মামলায় আসামি করা হয়েছিল। যা সবই মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। এবার তাঁর কলম থামিয়ে দেওয়ার জন্য হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। অমল তালুকদার বলেন,‘সাধারণ মুখপাত্র হিসেবে আমরা তাদের কথা তুলে ধরি। গণমাধ্যমে এ কথা তুলে ধরতে গিয়ে কারো বিপক্ষে যায়। এতে তারা সাংবাদিকদের শত্রু মনে করেন। তবে আমরা কারও শত্রু নয়, আমরা সাধারন মানুষের বন্ধু। তবে এ কাজ করতে গিয়েই সাংবাদিক মিজান প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। আমরা এ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে মিজানুর রহমানের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
উল্লেখ্য ঈদের আগের দিন ২৪ মে, রোববার দুপুরে পটুয়াখালীর বাউফলে থানার পূর্ব পাশে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনের সড়কের খালি জায়গায় বাউফল পৌরসভার উদ্যোগে করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে করনীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা লেখা সংবলিত ব্যানার স্থাপন করা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় যুবলীগ কর্মী তাপস কুমার দাস আহত হন।পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতে মারা যান। তাপসের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামে।
এ ঘটনায় ২৫ মে রাতে তাপসের বড় ভাই পঞ্চজ চন্দ্র দাস বাদী হয়ে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়মী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রাহাত জামশেদসহ ৩৫ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় সাংবাদিক মিজানকে ২০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এমআর/এমআর