তালতলীতে চাঁদা না দেয়ায় ইউপি সদস্যকে মারধর!

প্রথম পাতা » বরগুনা » তালতলীতে চাঁদা না দেয়ায় ইউপি সদস্যকে মারধর!
মঙ্গলবার ● ৩ মার্চ ২০২০


তালতলীতে চাঁদা না দেয়ায় ইউপি সদস্যকে মারধর!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চাঁদা না দেয়ায় ইউপি সদস্য মোঃ জাহাঙ্গির হাওলাদারকে মারধর করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী বাশার জোমাদ্দার ও তার সহযোগীরা। ঘটনা ঘটেছে সোমবার রাতে বরগুনার তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের উত্তর নলবুনিয়া গ্রামে। আহত ইউপি সদস্যকে ওইদিন রাতেই স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ মার্চ) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্যের স্ত্রী শিউলী আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নিদর্শে দিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের উত্তর নলবুনিয়া গ্রামের খাস পুকুরের ৪২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে খননের কাজ পায় বরগুনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কামাল নাইফ এন্টারপ্রাইজ। সাব ঠিকাদার হিসেবে ওই পুকুর খননের কাজ নেয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হাওলাদার। পুকুর খনন কাজ এ বছর ১৫ জানুয়ারী শুরু করে।  পুকুর খনন কাজের শুরুতে সাব-ঠিকাদার ইউপি সদস্য জাহাঙ্গিরের কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে স্থানীয় প্রভাবশালী বাশার জোমাদ্দার, ছগীর ও সাগর। এ টাকা দিতে রাজি হয়নি ইউপি সদস্য। এ নিয়ে ইউপি সদস্য ও ছগির খন্দকারের মাঝে কয়েক দফায় কথা কাটাকাটিতে ক্ষিপ্ত হয় বাশার জোমাদ্দার ও তার সহযোগীরা। সোমবার রাতে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হাওলাদার দক্ষিণ কচুপাত্রা রশিদ মাষ্টারের মাহফিল থেকে বাড়ী ফেরার পথে রাত সাড়ে ৮ টায় দিকে ছগির জোমাদ্দার, বাশার জোমাদ্দার, সাগর, সৈকতসহ ৮-১০ জনের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হওলাদারকে (৪০) আটকে লাঠি নিয়ে বেধরক মারধর করে এবং তাকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করে। তার ডাক চিৎকারে মাহফিলের লোকজন ছুটে এসে ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে। অপরদিকে ইউপি সদস্যকে মারধরের খবর পেয়ে তার  লোকজন এসে বাশার জোমাদ্দার ও তার ভাইয়ের ছেলে সাগরকে মারধর করেছে বলে দাবী করেন ছগির জোমাদ্দার। আহত দু’জনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে তালতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহত ইউপি সদস্যকে স্বজনরা ওইদিন রাতেই উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ইউপি সদস্য জাহাঙ্গিরের স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে বাশার জোমাদ্দারকে প্রধান আসামী করে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করছে। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নিদর্শে দিয়েছেন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ বলেন, আহত ইউপি সদস্যকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ছগির জোমাদ্দার চাঁদা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই বাশার জোমাদ্দার ও ভাইয়ের ছেলে সাগরকে ইউপি সদস্যের লোকজন মারধর করেছে। আহত দুইজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
তালতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি কিন্তু পুলিশ পৌছার পূর্বেই বাশার জোমাদ্দারের লোকজন পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হাওলাদার গত এক মাসে চারবার আমাকে ফোনে তাকে রক্ষার কথা জানিয়েছেন। এ ঘটনার কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তিনি ছুরি জব্দের কথা অস্বীকার করেন।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৫:২০ ● ৩২৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ