অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক গেছেন: কাদের

প্রথম পাতা » রাজনীতি » অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক গেছেন: কাদের
সোমবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯


অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক গেছেন: কাদের

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

মাদক, অনিয়ম, দুর্নীতির চক্র না ভাঙ্গা পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার নিউ ইয়র্কের পথে রওনা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে এমন নির্দেশনাই দিয়ে গেছেন।
সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এয়ারপোর্টে কথা হয়েছে, সবার সামনে তিনি বলেছেন এ ব্যাপারে। গডফাদার বলেন, অপরাধী যত বড়ই হোক, যে মাদকের সাথে জড়িত, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি যারা করবে, তাদের পরিচয়ৃতারা কোন দলেরৃ তারা সরকারি দলের হলেও ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে যেন কোনো আপোশ না হয়, আমি অনুপস্থিত থাকলেও যেন তা কনটিনিউ হয়’। বিগত সপ্তাহে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ঢাকায় যুবলীগ নেতাদের ‘৬০টি ক্যাসিনো চালানোর’ খবর আসে সংবাদমাধ্যমে।
বুধবার ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবসহ চারটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র‌্যাব। অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে ওই ক্লাবের সভাপতি যুবলীগের ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকেও গ্রেফতার করা হয়। এর দুই দিনের মাথায় শুক্রবার ঢাকার কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ও ধানম-ি ক্লাবেও অভিযান চালায় র‌্যাব। কলাবাগান ক্রীড়াচক্র থেকে ক্লাব সভাপতি কৃষক লীগ নেতা সফিকুল আলম ফিরোজসহ পাঁচজনকে অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া যুবলীগ নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ঠিকাদারী ব্যবসা, দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগে জি কে শামীমকে তার কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। অভিযান শুরুর পর ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা গা-ঢাকা দিলেও কারও কারও ওপর নজর রাখা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে কারও সঙ্গে কোনো আপোশ বা ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন নেই। শুরু হয়েছে, দেখুন, ওয়েট অ্যান্ড সি, কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। মফস্বলে অনেকে অ্যারেস্ট হচ্ছে, জেলা পর্যায়ে অনেকে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, যারা এসব অপকর্মের মধ্যে রয়েছে। এখানে মুখের কথা নয়। আমরা মিন করছি, শেখ হাসিনা মিন করছেন, তাই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। এ অভিযান চলবে যতদিন না দুনীতি, মাদকের চক্রকে ভেঙ্গে দিতে পারি। ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী স¤্রাটসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের নাম আসলেও তাদের কেন গ্রেফতার হচ্ছে না, এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, অ্যাকশনটা শুরু হল এক সপ্তাহ, সবকিছু যাচাই-বাছাই করা হবে। যারা অ্যারেস্ট হয়েছে তারা কি কম অপরাধী? কাজেই এখানে কেউ পার পাবে না, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কিছুকিছু বিষয় আছে সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খোঁজ খবর নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে তো গা ঢাকাও দিয়েছে, কাজেই এদের খুঁজে বের করতে হবে, নজরদারীতে রাখা হয়েছে এবং অতীতে যারা হয়তো নিজেকে আড়াল করে রেখেছে…খোঁজা হচ্ছে, ছাড় দেওয়া হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এ কথা কখনই বলব না যে অমুকের ব্যাক গ্রাউন্ড অমুক দল। এখন তারা অপরাধী হিসেবে, সন্ত্রাসী হিসেবে ধরা পড়ছে আওয়ামী লীগ বা তার কোনো সহযোগী সংগঠনের পরিচয়ে। আমরা এটাকেই দেখব। এখন যখন আমাদের দলের পরিচয়ে অপরাধ করছে, আমার দলের লোক হিসেবে শাস্তি দিচ্ছি। গ্রেফতার জি কে শামীম সরকারের বড় বড় কাজ করছে কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যদি আগে আপনি (সাংবাদিক) বের করতে পারতেন ভাল হত না? এটা সরকারই করেছে। সরকারকে দেখিয়ে দেবে সাংবাদিকরা। কোথায় রাস্তা খারাপ, কোথায় ব্রিজ পড়ো পড়ো অবস্থা- এ বিষয়গুলো তো সাংবাদিকরাই আমাদের দেখান। কাজেই বিষয়টা আপনাদের অগোচরেই রয়ে গেছে।
জি কে শামীম সরকারি কাজ পেতে বিপুল অংকের ঘুষ দিয়েছেন, এমন তথ্যের প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আপনারা একটু বের করুন কাদের কাদের ঘুষ দিয়েছে। কেউ বসে নেই সরকারের পক্ষ থেকে আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছি, এখানে কোনো প্রকার আপোশ নেই। আমরা তো কাজটা করছি। সরকারের এক বছর এখনও যায়নি। নট দ্যাট আমরা ইলেকশনকে সামনে রেখে এই ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছি ভোটের জন্য। আমি বলছি, আমরা মিন করছি, যা করছি। গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করাও দায়িত্বের মধ্যে আসে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। সামনে কোনো বড় ধরনের চমক রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি চমক বলতে চাই না। ক্রিমিনাল অফেন্স যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যুবলীগের স¤্রাট ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের নাম এলেও গ্রেফতার হচ্ছে না কেন প্রশ্নে কাদের বলেন, অ্যাকশনটা শুরু হয়েছে এক সপ্তাহ হলো, সবকিছু যাচাই-বাছাই করে হবে। যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা কি কম অপরাধী। কাজেই এখানে কেউ পার পাবে না, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কিছুকিছু বিষয় আছে সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খোঁজ-খবর নিচ্ছে।
জেলা পর্যায়েও কি অভিযান চলবে- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অলরেডি চলছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, বেটার লেট দেন নেভার। আমরা তো কাজটা করছি সরকারের এক বছরও এখনও যায়নি।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৫৫:০৬ ● ৪৮০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ