চরফ্যাশনে বেড়েছে সবুজ মিষ্টি পানের উৎপাদন

প্রথম পাতা » ভোলা » চরফ্যাশনে বেড়েছে সবুজ মিষ্টি পানের উৎপাদন
শনিবার ● ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০


চরফ্যাশনে বেড়েছে সবুজ মিষ্টি পানের উৎপাদন

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশন উপজেলার চরাঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে সবুজ মিষ্টি পানের উৎপাদন। মূল্য বেশী হওয়া লাভবান হচ্ছেন পান চাষীরা।
সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার চর-চরাঞ্চলে মিষ্টি পান চাষ করছেন কৃষকরা। এ অঞ্চলে মিষ্টি পানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দারাচ্ছেন পান চাষিরা। চরফ্যাশনের পান চাষিরা বর্ষাকালে পান চাষের নির্ধারিত আগাছামুক্ত সমতল জমিকে উচু করে প্রতি ৬০ সে.মি. পর পর ২০ সে.মি. চওড়া করে নালা তৈরী করে। পরে পানের বরজের বাহিরে বড় পানি নিকাশ নালার সাথে ছোট নালাগুলোকে যুক্ত করা হয়। এবং চারদিকে ২৫ ইঞ্চি চওড়া রাস্তা তৈরী ও জমির চারপাশে পাটকাঠির বেড়া তৈরী করে এবং শুকনো পাটি গাছ ও বাশেঁর কঞ্চি (বাশেঁর চিকন ডাল) দিয়ে চালার মাধ্যমে একটি ঘর তৈরী করা হয়। ভিতরে প্রতিটি বেড ৫০ ইঞ্চি চওড়া করে প্রতিটি বেডে দুই লাইনে (১২-১৫ ইঞ্চি দূরত্ব রেখে) প্রতিটি পানের চারা পাটকাঠির সাথে রোপন করা হয়।
চরফ্যাশনে সাধারনত যশোরি, হাইব্রীড, নলী, বাশঁপাতা, বাংলা, মিঠা, দেশি, বরিশাল, মাঘিসহ উজানী জাতের পান চাষ করা হয়। উপজেলার চর-ভূতা এলাকার পান চাষি খোকন চন্দ্র বালা (৪৫) ৫৬শতাংশ জমিতে ৪শ টি পানের বরজ (পানের লতা) গড়ে তুলেছেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই পান চাষে জড়িত। তার পানের বরজ থেকে প্রতি বছরে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার পান বিক্রি হয়ে থাকে। অল্প পুঁজিতে ফলন বেশি হওয়ায় সাবলম্বি হয়েছেন এ পান চাষি। তিনি জানান, শীত মৌসুম ছাড়া প্রতি মাসের ১৫-২০দিন পর পানের বরজ থেকে এ পান ভাঙ্গা (পান ছিড়া) হয়।
চরফ্যাশন উপজেলার দাসকান্দি গ্রামের রিপন মজুমদার বলেন, সংসারের দুর্দিনের সময় কোথাও কাজ না পেয়ে সামান্ন পুজি নিয়ে প্রথমে ১শ পানের বরজ গড়ে তুলি, পানের ভালো উৎপাদন হওয়ায় বর্তমানে ৮০শতাংশ জমিতে প্রায় ৪শ পানের বরজ গড়ে তুলেছি পাশাপশি পরিবারের সহযোগীতায় আমরা এখন অনেক ভালো আছি। তবে আমাদের দাসকান্দি এলাকায় খাল খনন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থ্যা না থাকায় এলাকার চাষিরা শিত মৌসুমে পানি সেচ সংকট ও বর্ষায় জলাবদ্ধতায় অনেক ক্ষতির মুখে পড়েন।
দুলারহাটের নুরাবাদ এলাকার চর যমুনা গ্রামের পান চাষি তপন তালুকদার জানান, মিষ্টি পানের চাহিদা বেশি থাকায় ও অল্প পুঁজিতে ভালো ব্যবসা হওয়ায় দির্ঘদিন ধরে পান চাষ করছি। তবে পৌষ মাঘ ও ফাল্গুনে পানের উৎপাদন কম থাকায় পানের মূল্য বেশি পাওয়া যায়। লাভের পাশাপশি রোগ বালাই দেখা দিলে বরজ প্রতি অনেক ক্ষতি সাধন হয়। তবে তিনি জানান পান চাষ করে তিনি এখোন সাবলম্বি।
চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট নুরাবাদ,নিল কোমোল, শশিভূষণ, চর কলমি, দক্ষিণ আইচাসহ বিভিন্ন এলাকায় এ পান চাষ হচ্ছে। চরাঞ্চলের এ পান স্থানিয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, লক্ষিপুরসহ রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্থানিয় খুচরা পান ব্যবসায়ি মোঃ কামাল জানান, বর্তমানে বাজার মূল্য বেশি থাকায় প্রতি বিরা (৭২টি পান) পান ধরন অনুযায়ি ২০-২০০টাকায় ক্রয় করছি।
আড়তদার মোঃ সেলিম মাদ্রাজি বলেন, বরিশাল পাতার হাট, হিজলা, মুলাদিসহ চরফ্যাশনের বিভিন্ন চরাঞ্চলের পান চাষিরা আমাদের আড়তে পান নিয়ে আসেন আমরা তাদের পান ডাকে বিক্রি করি। শুষ্ক মৌসুমে পান উৎপাদন কম থাকায় বর্তমানে বাজার মূল্যে পানের ছোট বড় প্রতি পাই (১২ বিরা) ৩০০-২হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চরফ্যাশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আবু হাছনাইন বলেন, পান চাষিরা পানের বরজে জৈব সাড় ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করলে আরোও ভালো ফলন উৎপাদন করতে পারবে।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৩:৫৯ ● ৩১১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ