
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, মহিপুর (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর মহিপুর থানা এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আক্রান্ত আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে গত এক মাসে একই এলাকায় ডেঙ্গু রোগে মৃতের সংখ্যা ৮ জনে উন্নীত হয়েছে।
সবশেষ সোমবার রাত ১১টার দিকে দুই যুবকের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার। নিহতরা হলেন মহিপুর বাজারের দর্জি দোকানী শিশির দাস এবং পার্শ্ববর্তী লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী উবাচো রাখাইন (রাখাইন সম্প্রদায়)।
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে দুজনই মারা যান।
এ নিয়ে এক মাসের মধ্যে মহিপুর থানা এলাকায় ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটজনে। আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে কুয়াকাটা ২০ শয্যার হাসপাতাল ও কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ডেঙ্গুতে মারা গেছেন লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের নুরজামাল ফকির এবং একই ইউনিয়নের মিশ্রীপাড়া গ্রামের হাবিব। তারা দুজনই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর মহিপুর এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী ছিলেন। সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে এলাকায় ডেঙ্গু আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী জানান, মহিপুর এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জনসচেতনতা বাড়াতে মাইকিং, প্রচারণা এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হামিদ বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ফগার মেশিনে স্প্রে এবং সচেতনতামূলক প্রচারণা চলছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মহিপুর, আলীপুর ও আশপাশের এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আলীপুর এলাকার একই পরিবারের তিনজন ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, তাঁদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে।