গলাচিপায় পাঁচ টাকায় চলছে জাফরের জীবন!

হোম পেজ » পটুয়াখালী » গলাচিপায় পাঁচ টাকায় চলছে জাফরের জীবন!
মঙ্গলবার ● ৮ জুলাই ২০২৫


 

মোঃ জাফর

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী)

 

“টাকা পাইলে খাই, না পাইলে খাই না” এই কথাতেই লুকিয়ে আছে ৫৬ বছরের জাফরের জীবনসংগ্রাম। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আশ্রিতভাবে বসবাস করছেন তিনি। ভেঙে পড়া শরীর, নেই স্ত্রী-সন্তান, নেই নিজের ঘরজমি, জাতীয় পরিচয়পত্রওটি নেই।

 

প্রতি ভোরে হাঁটতে হাঁটতে ৮-১০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে জাফর পৌঁছান গলাচিপা বাজারে। হাতে থাকে কয়েকটা খালি কলসি। দোকানে দোকানে পানি সরবরাহ করাই তার একমাত্র কাজ। প্রতিটি কলসির জন্য পান মাত্র ৫ টাকা। দৈনিক আয় ১০০–১৫০ টাকা। সেই টাকায় কোনোরকমে জোটে দু’বেলার খাবার। আয় না হলে উপোসেই কাটে দিন।

 

একসময় দিনমজুর ছিলেন জাফর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। স্ত্রী তাকে ২০ বছর আগে ছেড়ে চলে গেছেন। নেই কোনো সন্তান। আছেন শুধু এক মানসিক প্রতিবন্ধী ছোট ভাই, থাকেন পটুয়াখালী সদরের দক্ষিণ বাদুরায়।

 

জাফরকে সহানুভূতির চোখে দেখেন অনেকেই। দোকানি সাইফুল ইসলাম বলেন, জাফর সহজ-সরল মানুষ। অসুস্থ থাকলে পড়ে থাকে, ওষুধ কেনারও টাকা থাকে না।

চা দোকানি সিদ্দিক মিয়া বলেন, সবাই তাকে চেনে। শুধু পানি টানার কাজ করে। পাঁচ টাকা দিলেই খুশি।

 

আশ্রয়দাতা মজিবর মিয়া বলেন, তার কোনো পরিচয়পত্র নেই। ফলে কোনো সরকারি সাহায্যও পায় না। আমি যতটুকু পারি, সাহায্য করি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহআলম বলেন, আমি তাকে চিনি। খুব ভালো মানুষ। এনআইডি না থাকায় সে সরকারি কোনো সুবিধা পাচ্ছে না, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো বলেও জানালেন এই সাগরকন্যা প্রতিবেদককে।

 

স্থানীয়দের দাবি, জাফরের নামে দ্রুত এনআইডি কার্ডের ব্যবস্থা করে বয়স্ক বা প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিএফ বা চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হোক।

জাফরের মতো অসহায় মানুষের করুণা নয়, অধিকার হিসেবে সরকারি সেবা পাওয়া উচিৎ বলেও মনে করেন তাঁরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৬:৫৭ ● ৬৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ