
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
পর্যটনের শহর কুয়াকাটা পৌরসভার অদূরে মুসুল্লীয়াবাদ গ্রাম। যে গ্রামের উপর দিয়েই পর্যটকরা বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিদর্শনে গিয়ে থাকেন। মুসুল্লীয়য়াবাদ থেকে সাধুর ব্রিজ পর্যন্ত মাত্র দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কই যেন পর্যটন কেন্দ্রটির ঘারে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৫৪ বছরেও এটি পাকা হয়নি।
বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে হাঁটু সমান কাদাপানিতে একাকার থাকে। সৃষ্টি হয় অসংখ্য গর্ত। ফলে পর্যটকসহ সেখানকার অন্তত ১০ গ্রামের মানুষকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। এই সড়ক হয়ে কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা যান রাখাইন পল্লী, রাখাইনদের তাঁতশীল্প, রাখাইন জাদুঘর, সুবিশাল বৌদ্ধ মুর্তি এবং গঙ্গামতি সৈকতে সূর্যোদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে। শীত মৌসুমে মোটরসাইকেল, অটোভ্যানসহ নানা যানবাহন চলাচল করলেও বর্ষায় তা বন্ধ থাকে।
রাস্তার পাশে রয়েছে মুসুল্লীয়াবাদ সিনিয়র মাদ্রাসা, মুসুল্লীয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রী শ্রী অনুকুল চন্দ্র ঠাকুরের মন্দির। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। বর্ষায় কাদায় পড়ে তাদের জামাকাপড় নষ্ট হয়, অনেকের পড়ে গিয়ে আহত হবার একাধিক নজির রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, স্থানীয় জনগণের কাছে স্বাধীনতার পর থেকে রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও কোনো সরকারই কাঁচা রাস্তা পাকা করণের কাজে উদ্যোগ নেয়নি। এলাকাবাসী বহুবার জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের দ্বারস্থ হলেও কাজে আসেনি।
মুসুল্লীয়াবাদ সিনিয়র মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান বলল, প্রতিদিন কাদা মাড়িয়ে ক্লাসে যেতে হয়। শুকনো মৌসুমে ভারী যানবাহন চলাচল করায় রাস্তা ভেঙে গর্ত হয়ে যায়। বর্ষায় সেসব গর্তে পানি জমে হাঁটু সমান কাদা হয়।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা জনৈক পর্যটক জামান বলেন, গত শীতে এসেছিলাম গঙ্গামতিতে। এবার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বর্ষার রূপ দেখাতে এসে কাদায় আটকে পড়ি। জরুরি ভিত্তিতে এই রাস্তাটি পাকা হওয়া দরকার। স্থানীয় বাসিন্দা কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বেলাল বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনো পর্যন্ত এই রাস্তাটি কাঁচা। জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছার অভাবে আমাদের এমন কষ্ট করতে হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান মুসুল্লী বলেন, স্থানীয়দের দাবির পরও আমি বারবার চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছি।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, উপজেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখনো কাঁচা। বরাদ্দের অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। তবে নতুন প্রকল্প এলে মুসুল্লীয়াবাদের সড়কটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।