চরফ্যাশনে জেলেদের ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়ম

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চরফ্যাশনে জেলেদের ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়ম
রবিবার ● ৩০ মে ২০২১


চরফ্যাশনে জেলেদের ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়ম

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

নদীতে দুই মাসের মাছ ধরা বন্ধের নিষেধাজ্ঞার ধকল না কাটতেই সাগরের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন হয়ে ভোলার চরফ্যাশনের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক অভাবগ্রস্ত জেলে পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। দিশেহারা এসব জেলে পরিবারগুলো সরকারি ভাবে প্রাপ্য খাদ্য সহায়তা থেকেও ঠকেছেন। চরমাদ্রাজ ইউনিয়নে ভিজিডির চাল বিতরণের অনিয়মের ফলে ট্যাগ অফিসার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চাল বিতরণ স্থগিত করেছেন।
উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলায় ৬৯ হাজার ২৫০ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। কার্ডধারী জেলে প্রায় ২১ হাজার। এসব জেলের মধ্যে জাটকা আহরণে বিরত থাকা ১৯ হাজার ৩৩ জনকে ফেব্রুয়ারী-মার্চ দুই মাসে ৮০ কেজি হারে ১ হাজার ৫ শত ২২ দশমিক ৬৪ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেন। দ্বিতীয় ধাপে ২০ হাজার ১৬১ জনকে এপ্রিল-মে মাসের ১ হাজার ৬শত ১২ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেন। সাগরে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় ১৭ হাজার ৫৬১ কার্ডধারী জেলের জন্য ৫৬ কেজি হারে চাল বরাদ্ধ পেয়েছেন। জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের চার মাসের চালের ডিউ দেয়া হয়েছে। সাগরে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের বরাদ্দের ডিউ দু‘ এক দিনের মধ্যে দেয়া হবে।
জেলেদের অভিযোগ কার্ডধারী অনেক জেলে ভুয়া। অন্য পেশার লোক। আর প্রকৃত অনেক জেলে কার্ড থেকে বাদ পড়েছেন। বরাদ্দপ্রাপ্ত চালের অর্ধেকও জেলেরা পান না। জেলেদের অভিযোগ প্রত্যেক ধাপে দুই মাসের ৮০ কেজি হারে বরাদ্দ এলেও ৩৫ কেজি হারে চাল দেন জেলেদের। বাকী চাল চেয়ারম্যানরা লোপাট করার অভিযোগ।
জাহানপুর রসুল ইউনিয়ন পরিষদ জেলেদের মাঝে জাটকা আহরণের চাল বিতরণ করেন। দ্বিতীয় কিস্তিতে দুই মাসে ৮০ কেজির স্থলের এক মাসের ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন বলে অভিযোগ জেলেদের।
এ ছাড়া ইমন নামের চেয়ারম্যানের এক আত্মীয় ৪বস্তা চাল নেয়ার পথে স্থানীয়রা আটক করে পরে ছেড়ে দেন। অভিযোগ প্রসংগে জাহানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুস বলেন, দ্বিতীয় কিস্তির চালের দুইমাসের এক মাসের চাল ৩৬ কেজি করে বিতরণ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরেক মাসের চাল বিতরণ করা হবে। চাল আনতে খরচ হওয়ায় চাল কম দেয়া হয়েছে।
গত শনিবার রসুল ইউপির চাল প্রাপ্তকার্ডধারী জেলে আবুল কাশেম ৩৩কেজি, সোহাগ ৩০ কেজি, আবুল কালাম, মোসলেমসহ অনেক জেলে ৩৫ কেজি করে এক কিস্তির চাল পেয়েছেন, তারা আর কখনো চাল পাননি বলে অভিযোগ করেন। জেলেদের চাল পরিমানে কম দেয়ার এমন অভিযোগ প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়নেই রয়েছে।
এদিকে চরফ্যাশনে ওচমানঞ্জ ইউনিয়নে ৮ওয়ার্ডে কাশেমের বাড়ীতে সরকারি ভিজিএফ জেলেদের দেয়া সাড়ে ৯ বস্তা চাল নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিপন বিশ^াস জব্দ করেছেন। ওই চাল গুলো গোডাউন থেকে ক্রয় করে ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে বলে স্থানীয় আবুল কাশেম মোল্লা অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম পন্ডিত মুঠোফোনে বলেন, দুইমাস (এপ্রিল- মে)’র চালের এক মাসের চাল ওইদিন দেয়া হয়েছে। আরেক মাসের চাল আগের সপ্তাহে দেয়া হয়েছে। তাই ৪০ কেজি হারে চাল দেয়া হয়েছে। চাল কম দেয়ার অভিযোগ সত্য না। তিনি জানান, রসুলপুর ইউনিয়নে ৩ হাজারের বেশী জেলে রয়েছেন প্রথম ধাপে ৩৮৩ কার্ডের দুইমাসের, দ্বিতীয় দাপে ৮২৮ নামের দুই মাসের কার্ড প্রতি ৪০ কেজি হারে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। চার মাসে মোট ২৪শ‘ জেলের বরাদ্দ পেয়েছি। জন প্রতি একবার চাল দিলেও ৬/৭ শ‘ জেলের চাল বাকী থাকে। তাদেরকে সাগরে মাছধরা বন্ধের বরাদ্দ থেকে চাল দেয়া হবে।
চরফ্যাশন চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জিন্নগড় ইউপি চেয়ারম্যান  মোঃ হোসেন মিয়া বলেন, প্রাপ্ত বরাদ্দ অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়নে চাল বিতরণ হয়েছে। চাল কম দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা।
উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, জাটকা বরাদ্দের ৪ টি উিউ দেয়া হয়েছে। সাগরে মাছধরা বন্ধেরপ্রাপ্ত বরাদ্দের উিউ দুই একদিনের মধ্যে দেয়া হবে। বরাদ্ধের চেয়ে জেলে বেশী হওয়ায় বঞ্চিত জেলেরা চাল কম দেয়া বা না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩২:৪১ ● ১১৬৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ