পিরোজপুরে বোন-ভগ্নিপতিকে বেঁধে রেখে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » পিরোজপুরে বোন-ভগ্নিপতিকে বেঁধে রেখে ঘর নির্মাণের অভিযোগ
বুধবার ● ১৮ নভেম্বর ২০২০


পিরোজপুরে বোন-ভগ্নিপতিকে বেঁধে রেখে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥


পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামে প্রতিপক্ষ আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোন-ভগ্নিপতিকে এক দড়িতে বেঁধে রেখে ত্রাণের ঘর নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে।
১৩ নভেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনার পর আতংকগ্রস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদদ সম্মেলন করেছেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমির মালিক পক্ষ  ইউসুফ আলী খানের মেয়ে খাদিজা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমার বাবা মোঃ ইউসুফ আলী খান নানা  মোসলেম ফকিরের কাছ থেকে আমার মা কুলসুম বেগম এর নামে ্এবং আমার দুই ভাই মোঃ সেলিম খান ও মোঃ হালিম খান আমার নানার দুই বোন চানবরু ও ফুলবরুর কাছ থেকে সাব কবলামূলে ৬টি দলিলে মোট .৭৯ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে আমরা সেখানে বসতঘর নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করিয়া আসিতেছি।
কিন্তু শুরু থেকেই আমার মামা আনোয়ার ফকির গং অন্যায়ভাবে আমাদেরকে সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার নানা রকম ষড়যন্ত্র করিতে থাকেন। তারা দলবল নিয়া প্রায় আমাদের পরিবার পরিজনকে গালাগাল এবং হুমকি দিয়া আসছিলেন। প্রতিপক্ষ আনোয়ার ফকির গং এরপর আমাদের সম্পত্তি থেকে জোড় করো সোয়া চার লক্ষ টাকার মেহগনি, চাম্বল, বাদাম গাছ, আমগাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়া যায়। এ  ঘটনায় আমার মা কুলসুম বেগম বাদী হইয়া মঠবাড়িয়া জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং মামলাটি বিচারধীন আছে। এই মামলা দায়ের করায় প্রতিপক্ষ আরো ভীষন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে হয়রানি ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। যার ফলে আমার মা মঠবাড়িয়া সহকারী জজ আদালতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দেওয়ানী ৭৮/১৮ নং মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত এই মামলায় নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পেশী শক্তিতে বলিয়ান প্রতিপক্ষ আমাদের সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি আমাদের ভোগ দখলীয়  সম্পত্তিতে জোর করে ঘর নির্মানের কৌশল হিসাবে ত্রানের ঘর নির্মানের জন্য নানারকম দেনদরবার ও তদবীরে নেমে পড়েন। আমাদের সম্পূর্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তিতে বেআইনি ও অন্যায়ভাবে ঘর নির্মানের জন্য আনোয়ার ফকিরের যোগসাজসে স্থানীয় ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ কাইয়ুম হাওলাদার, মোঃ হানিফা হাওলাদার, সিদ্দিক ফরাজী মতিউর রহমান ফরাজীসহ তাদের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর শুক্রবার সকালে আমাদের সম্পত্তিতে জোর করে  ত্রানের ঘর নির্মান শুরু করলে আমার মা-বাবা বাধা দেন। এ সময় প্রতিপক্ষ আমার পিতা- মাতাকে এক দড়িতে বেঁধে হত্যার হুমকি দিয়ে ধারালো দা নিয়া আসে এবং ঐ সম্পত্তি ভোগ দখল করিতে হইলে তাদেরকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে জানায়। এসময় তাহাদের আত্মচিৎকারে আমার বড় মামা আব্দুল কাদের ফকির, বড় মামি আনোয়ারা বেগম, বড় মামার মেয়ে ফাতেমা বেগম, ছোট মামার স্ত্রী রাজিয়া বেগম সহ স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে তাদের কে উদ্ধার করেন।
এদিকে পারিবারিক কারনে আমি আমার বোন, আমার দুই ভাই পরিবার পরিজন নিয়া খুলনায় বসবাস করার কারনে আমরা সেখানে বসে মোবাইল যোগে খবর পেয়ে আমি প্রথমে মঠবাড়ীয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনা সম্পর্কে মুঠোফোনে অবগত করলে তিনি ঘটনা স্থানে পুলিশ সদস্যদের পাঠান। পরের দিন প্রতিপক্ষ আবারও  ঘর নির্মান শুরু করিলে আমি ৯৯৯ এ জরুরী সেবা পেতে ফোন করলে পুলিশ সদস্যরা পূনরায় ঘটনা স্থলে আসেন। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী প্রতিপক্ষ এখন সেই ত্রানের ঘরে অবস্থান করতেছে।
এ ব্যাপারে গত ১৫ নভেম্বর আমার মা কুলসুম বেগম পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের বরাবরে লিখিত আবেদন করলে তিনি বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব এর কাছে প্রেরণ করেন। বর্তমানে আমরা পরিবার পরিজন নিয়া প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলা ও হয়রানির ভয় চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। এর আগেও আমার মা জেলা প্রসাসক, পুলিশ সুপার এবং মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। পুুলিশ সুপার আমার মায়ের একটি লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থাগ্রহনের জন্য মঠবাড়িয়া অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। তিনি তদন্তের জন্য এস.আই (নিরস্ত্র) মোঃ আসলাম হোসেনকে দায়িত্ব দিলে তিনি নন এফ আই আর প্রোসিকিউশন (নং-১০৩/২০, তাং ০৫/১০/২০২০ ইং ধারা ১০৭/১১৭ ফৌঃ কাঃ বিঃ) দেন।
এ ব্যাপারে ১১ নং বড় মাছুয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন,এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ইউএনও মহোদয় তদন্তের দায়িত্ব দিলে আমি তাদেরকে ৪ বার নোটিশ করি কিন্তু তারা উপ¯িথত হয়নি। পরে আমি কাগজপত্রের ভিত্তিতে আনোয়ার ফকিরের সেখানে জমি আছে বলে রিপোর্ট দেই।

আরএইচএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৬:৪৬ ● ৩০৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ