
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, বরগুনা
বরগুনার পুরাকাটা ফেরিঘাটে তুচ্ছ ঘটনার জেরে ছুরিকাঘাতে আনসার হাওলাদার (৩৫) নামে এক খেয়ার মাঝি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে হামলার ঘটনা ঘটলেও শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল শেষে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ।
নিহত আনসার হাওলাদার বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে। অভিযুক্ত শাহিন (৩০) একই এলাকার আবদুস সত্তারের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে শাহিন পুরাকাটা ফেরিঘাটের একটি খেয়া নৌকায় ওঠেন। এ সময় যাত্রী বসার স্থানে জুতা দিয়ে নোংরা করায় খেয়ার শ্রমিক আনসার তাঁকে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিন বারবার খেয়া নৌকায় ওঠানামা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি আনসারকে পল্টুনে ডেকে নিয়ে পরপর ছয়টি ছুরিকাঘাত করেন। তলপেট ও বুকে ছুরিকাঘাতের পর পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয়রা অভিযুক্ত শাহিনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী ইদ্রিস জানান, খেয়া নৌকায় ৩০-৪০ জন যাত্রী ছিলেন। প্রথমে তাঁরা ঘটনাটিকে হাসি-ঠাট্টা মনে করেছিলেন। এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে কেউ বুঝতে পারেননি।
গুরুতর আহত অবস্থায় আনসারকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতালে এবং পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শুক্রবার দিবাগত রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
খেয়াঘাটের ইজারাদার আলহাজ আবদুল মজিদ খান সাগরকন্যাকে জানান, আনসার একজন ভালো মাঝি ছিলেন। কোমরের ব্যথার কারণে কিছুদিন কাজ করতে পারেননি। দুই দিন আগে কাজে ফিরে এসে বলেছিলেন, তাঁর ঘরে দুটি শিশু সন্তান রয়েছে, তারা না খেয়ে আছে। কাজের সময় তাঁর কোমরে বেল্ট থাকায় আঘাত কিছুটা কম হয়েছিল।
নিহত আনসারের স্ত্রী, দুই ছোট সন্তান ও বৃদ্ধ মা রয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ৭টায় পুরাকাটা ফেরিঘাটে জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়। লাশ ফেরিঘাটে পৌঁছালে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকাটি ভারী হয়ে ওঠে।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আলিম বলেন, অভিযুক্ত শাহিনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।