
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
শীতের হাওয়া লাগতেই পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটার চর বিজয়ে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেছে অসংখ্য অতিথি পাখি। নীল জলরাশি আর ধু-ধু বালুচরে এখন নানা রঙের পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত পুরো দ্বীপটি। নিরাপদ আশ্রয় আর মানুষের কম বিচরণ থাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও এখানে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের বুকে প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তনের এ দ্বীপটি কুয়াকাটা সৈকত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। নভেম্বরের শুরুতেই সাইবেরিয়াসহ দূর-দূরান্ত থেকে জুলফি পানচিল, গাঙ্গচিল, সিথি হাঁস, খুন্তে হাঁস, পানকৌড়ি, বক, চেগাসহ নানা প্রজাতির পাখি এখানে আসে এবং মার্চ পর্যন্ত অবস্থান করে। কেউ ডুব দিয়ে খাবার খুঁজছে, কেউ বালুচরে বিশ্রাম নিচ্ছে-সব মিলিয়ে যেন পাখির মেলা।
এই অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছেন চর বিজয়ে। স্বচ্ছ জল, লাল কাঁকড়া, বিস্তীর্ণ বালুচর আর পাখির সমাগম পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করছে। ঢাকা ও সিলেট থেকে আসা পর্যটকরা জানান, সাগরের মাঝখানে এমন পাখিবহুল দ্বীপ প্রকৃতির বিরল সৌন্দর্য। তবে তারা মনে করেন, আরও বেশি গাছ লাগানো গেলে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি হবে।
ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা জানান, কুয়াকাটা থেকে বোটে যেতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। দ্বীপের কাছে গেলেই চোখে পড়ে দলবেঁধে উড়ে বেড়ানো পাখির ঝাঁক ও স্বচ্ছ জলে সামুদ্রিক প্রাণীর চলাচল। তবে চরটিতে দোকানপাট না থাকায় পর্যটকদের খাবার পানি সঙ্গে নিতে হয়।
বন বিভাগ ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোও পাখি শিকার প্রতিরোধে কাজ করছে। মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একে এম মনিরুজ্জামান বলেন, চরটিতে রোপণ করা গাছগুলো বড় হচ্ছে এবং সুফল প্রকল্পের আওতায় বনায়ন কার্যক্রম চলছে। এতে চর বিজয় ভবিষ্যতে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্বীপটি বর্ষায় পানিতে ডুবে থাকলেও শীত এলেই জেগে ওঠে নতুন রূপে। তাই শীতের শুরুতেই চর বিজয় হয়ে ওঠে রঙিন অতিথি পাখির স্বর্গভূমি।
এমবি/এমআর