
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, বাগেরহাট
বঙ্গোপসাগর তীরের সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হচ্ছে শুটকি মৌসুম। মৌসুমকে ঘিরে বাগেরহাটের মোংলা উপকূলে ভিড় করছে শত শত জেলে ট্রলার। বনবিভাগের পাস-পারমিট নিয়ে শনিবার মধ্যরাত থেকে সাগরে নামবেন তারা। এ সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ট্রলারে তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে শুটকি মৌসুম। চার মাসের এই সময় জেলেরা আলোরকোল, অফিসকেল্লা, নারকেলবাড়িয়া ও শেলার চরে অবস্থান করবেন। চরগুলোতে ৯০০ ঘর ও ৮০টি দোকান নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া মাছ কেনাবেচার জন্য ১০০টি ডিপোর অনুমোদন রয়েছে। পুরো মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার জেলে-মহাজন সেখানে সমবেত হবেন।
তিনি জানান, বনবিভাগের নিয়ম অনুযায়ী জেলেরা কোনোভাবেই বনের গাছপালা কাটতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই জেলেরা ঘর, চাতাল ও জেটি তৈরির সব উপকরণ সঙ্গে নিয়েই যাচ্ছেন।
মোংলার মহাজন কালাম ব্যাপারী ও লতিফ হাওলাদার বলেন, এই মৌসুমেই ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। এতে মাছ শুকানো ও ধরার কাজে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। কখনও ট্রলার ডুবে যায়, আবার বৃষ্টিতে মাছ পচে যায়। তাই জীবনবাজি রেখে সাগরে নামতে হয়।
মহাজন রফিকুল ইসলাম বলেন, বনের কোনো ক্ষতি না করেই চরে স্থাপনা তৈরির উপকরণ সঙ্গে নিচ্ছেন তারা।
মোস্তফা সানা জানান, একটি ট্রলার নিয়ে দুবলার চরে যেতে ২০-২৫ লাখ টাকা খরচ হয়। এজন্য ধার-কর্জ করে তারা সাগরে যান। আবহাওয়া ভালো থাকলে লাভ হয়, না হলে বড় লোকসান গুনতে হয়।
জেলে কালাম শেখ বলেন, কয়েক বছর শান্ত থাকার পর আবার জলদস্যুতা বাড়ছে। গত বছর তার জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ নেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার জন্য তিনি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চান।
বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গত মৌসুমে শুটকি থেকে ৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৭-৮ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়া যেতে পারে। জেলেদের নিরাপত্তায় বনবিভাগের পাশাপাশি কোস্টগার্ডও অবস্থান করবে।