
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, আমতলী (বরগুনা)
বরগুনার তালতলীতে পৈত্রিক জমি রক্ষায় মামলা দায়ের করে এখন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এক মাদ্রাসা শিক্ষক। মামলা তুলে না নিলে বিশেষ বাহিনী দিয়ে তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. কাউয়ুম সিকদার ও তাঁর ভাই শাহীন সিকদার- এমন অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী সহকারী শিক্ষক আবু সেলিম সিকদার।
তিনি তালতলী উপজেলার কড়াইবাড়িয়া দারুসসুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ছোটবগী গ্রামের বাসিন্দা। সেলিম জানান, প্রায় ২০ বছর আগে তিনি পৈত্রিক জমিতে বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। বাড়ির সামনে পুকুর, মাছের ঘের এবং প্রবেশ পথও নির্মাণ করেন। ওই জমির মধ্যে ৭ শতাংশ জমি নিজেদের দাবি করে আসছেন ব্যাংক কর্মকর্তা কাউয়ুম সিকদার ও তাঁর ভাই।
গত বছর ১০ আগস্ট তাঁদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ বাহিনী এসে তাঁর বাড়ির প্রবেশ পথ, পুকুর পাড়, মাছের ঘের এবং জমিতে লাগানো গাছ কেটে ফেলে। এতে প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত এক বছর ধরে পরিবারসহ ভোগান্তিতে রয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর।
গত ৫ সেপ্টেম্বর তিনি আবারও প্রবেশ পথ নির্মাণ করেন। এরপর কাউয়ুম সিকদার ফোন করে হুমকি দেন, পথ কেটে ফেলা হবে, না হলে আবার বিশেষ বাহিনী এনে তাঁকে তুলে নেওয়া হবে। নিরুপায় হয়ে ৭ সেপ্টেম্বর আবু সেলিম কাউয়ুম সিকদার ও তাঁর ভাইকে আসামি করে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আবু সেলিম বলেন, মামলা করার পর থেকেই ব্যাংক কর্মকর্তা ও তাঁর লোকজন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। তাঁকে বিশেষ বাহিনী দিয়ে তুলে নেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম গাজী, সিদ্দিক সিকদার ও ইদ্রিস সিকদার বলেন, সরকার পরিবর্তনের পরপরই বিশেষ বাহিনীর উপস্থিতিতে ওই জমির প্রবেশ পথ ও পুকুরপাড় কেটে ফেলা হয়।
অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মো. কাউয়ুম সিকদার বলেন, ওই জমি তাঁদের নামে বিএস রেকর্ডভুক্ত। আবু সেলিম দীর্ঘদিন ধরে জোর করে দখল করে রেখেছেন। তাই তাঁরা জমি উদ্ধার করেছেন। তবে বিশেষ বাহিনী আনা ও হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
তালতলী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, আদালতের নির্দেশ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।