
এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর মহিপুরে গাববাড়ীয়া নদীতে নির্মিত বাঁধ স্থানীয়দের জন্য এখন ভয়াবহ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে অন্তত ৪০ গ্রামের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি, পরিবেশ ও নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সরেজমিনে জানা যায়, বাঁধ ও সুইজগেটের কারণে তিন দিকের সংযোগ নদীর পানি নামতে পারছে না। জোয়ারের সময় পানি ওঠে, কিন্তু ভাটায় নামে না। ফলে ৭৫ হাজার একর কৃষিজমি পানিতে ডুবে আছে। এতে প্রায় অর্ধলাখ কৃষক আমন আবাদে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, জলাবদ্ধতায় বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গবাদি পশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। নদীর শাখা-খালগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। সুইজগেটগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এই বাঁধ নদী হত্যার শামিল। পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় নদী ও খালের দুই পাড়ে ছইলা, কেওড়া বাগানসহ সংরক্ষিত বনভূমি হুমকির মুখে পড়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য।
স্থানীয়রা জানান, আগে নদীপথে নৌকায় বাজারে যাওয়া, পণ্য আনা-নেওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু বাঁধ দেওয়ার পর থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক ইশারাত আলী বলেন, গাববাড়ীয়া নদী এখন মৃতপ্রায়। বাঁধের কারণে জমি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এখানে জরুরি ভিত্তিতে একটি কার্যকর সুইজগেট দরকার।
পরিবেশ আন্দোলনকর্মী মেজবা উদ্দিন মান্নু জানান, পরিকল্পনাহীনভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বড় ধরনের সুইজগেট ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইয়াসীন ছাদেক বলেন, গাববাড়ীয়া নদীতে বাঁধের কারণে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।