আমতলীতে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ভুয়া এনজিও

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ভুয়া এনজিও
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০১৯


---

আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী পৌর শহরের ওয়াপদা সড়কের এসকেএস নামের একটি ভুয়া এনজিও ঋণ দেয়ার নামে সঞ্চয় টাকা উত্তোলন করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার শতাধিক ভুক্তভোগী আমতলী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এসে এ অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, এসকেএস নামের একটি বে-সরকারী সংস্থা গত ৫ এপ্রিল আমতলী পৌরসভার ওয়াপদা সড়কের শাহ আলম হাওলাদারের বাসা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় বসে সংস্থার পরিচালক পরিচয়ে মহিউদ্দিন রানা উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুরকাট, চাওড়া ইউনিয়নের পাতাকাটা, বৈঠাকাটা, আমতলী পৌর শহরের লোচাসহ বিভিন্ন এলাকায় সমিতি গঠন করে। জনপ্রতি ২’শ টাকা নিয়ে ১০-১৫ সদস্যের একটি সমিতি গঠন করে। উপজেলায় প্রায় শতাধিক সমিতি এভাবে গঠন করেছে ওই এনজিও পরিচালক।  সমিতির সদস্যদের ঋণ দেয়ার নাম করে সঞ্চয় বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা নেয়। এ ভাবে শতাধিক সমিতির প্রায় সহ¯্রাধীক সদস্যের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। মঙ্গলবার ছিল ঋণ বিতরনের দিন। ওইদিন কয়েক শতাধিক ঋণ গৃহিতা অফিসে আসে। কিন্তু অফিসের মূল ফটক তালাবন্ধ দেখতে পায়। পরে এনজিও পরিচালক মহিউদ্দিন রানার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার ফোন বন্ধ পায়।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এনজিও পরিচালক রানা ঋণ দেয়ার কথা বলে সঞ্চয় বাবদ লাখে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। এভাবে সহ¯্রাধীক লোকের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান তারা। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, ঘরের মালিক শাহ আলম হাওলাদারের যোগসাজসে এনজিও’র পরিচালক মহিউদ্দিন রানা কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, ওয়াপদা সড়কে এনজিও অফিস তালাবন্ধ। অফিসে লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছে।
উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের সুমন মল্লিক, মনির মল্লিক, নাসিমা, রাসেল আকন, খাদিজা, সোবাহান, হেলেনা, হাসিনা, মিলন বিশ^াস, ফরিদ মুন্সি ও ছগির বলেন, ঋণের টাকা নিতে এসে অফিস ঘর তালাবন্ধ দেখতে পাই। তারা আরো বলেন, ঋণ দেয়ার নাম করে আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে লাখে ১০ হাজার টাকা করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
চাওড়া ইউনিয়নের বৈঠাকাটা গ্রামের আবু হানিফ হাওলাদার, খলিল মৃধা, কহিনুর, জাহানারা, মুনসুরা, রাবেয়া ও আমেনা জানান, ঋণ দেয়ার নাম করে আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে। তারা আরো জানান, অফিসে এসে দেখি এনজিও’র অফিস তালাবন্ধ। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
পাতাকাটা গ্রামের খবির মাদবর, জুয়েল মাদবর, শাহ আলম খলিফা ও খোকন হাওলাদার জানান, এনজিও’র পরিচালক মহিউদ্দিন রানা ও ঘর মালিক শাহ আলম হাওলাদারের যোগসাজসে ঋণ নেয়ার কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এসকেএস এনজিও’র ঘর মালিক শাহ আলম হাওলাদার এনজিও’র সাথে তার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে বলেন, টাকা যারা দিয়েছে তারা আমাকে কখনো জানায়নি।
এ বিষয়ে এসকেএস এনজিও’র পরিচালক মোঃ মহিউদ্দিন রানার মুঠোফোন যোগাযোগ করে তার সকল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৯:৪০ ● ৬৬৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ