তালতলীতে সিজারে নবজাতকের পিঠ কেটে ফেলার অভিযোগ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » তালতলীতে সিজারে নবজাতকের পিঠ কেটে ফেলার অভিযোগ!
রবিবার ● ২৮ জানুয়ারী ২০২৪


তালতলীতে সিজারে নবজাতকের পিঠ কেটে ফেলার অভিযোগ!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আলট্রাসনোগ্রাম করতে গিয়ে চিকিৎসক রুনা রহমানের তাড়ায় প্রসুতি লিপি বেগমের সিজারিয়ান অপারেশনকালে নবজাতকের পিঠ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিশুর স্বজন ও এলাকাবাসী। ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাতে তালতলী উপজেলার দোয়েল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলা শহরের জামে মসজিদ সংলগ্ন বৈশাখী হোটেলের মালিক মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল সোহাগ শনিবার দুপুরে তার স্ত্রী লিপি বেগমকে আল্ট্্রাসনোগ্রাম করতে দোয়েল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ওই ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাম শেষ হওয়ার পরপরই ডাঃ রুনা রহমান ব্যবসায়ী সোহাগকে তার স্ত্রীর দ্রুত অপারেশন করাতে বলেন। ওই সময়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ১৮হাজার টাকায় তার সঙ্গে চুক্তি করে। সোহাগের অভিযোগ অপারেশন না করে তার স্ত্রীকে বাসায় নিয়ে আসতে চাইলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে আসতে দেয়নি। পরে ওইদিন রাত সাতটার দিকে তার স্ত্রী লিপি বেগমকে ওই ক্লিনিকের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রুনা রহমান অপারেশন করেন। স্বজনরা জানান, অপারেশনের এক পর্যায় শিশুটির কান্নার শব্দ শুনতে পায়। এ সময় তারা শিশুটির অবস্থা জানতে চাইলে চিকিৎসক কোন জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান। ঘটনার ২৭মিনিট পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে তার স্বজনদের হাতে তুলে দেন। ওই সময় শিশুটির পিঠে ধারালো অস্ত্রেও কাটা চিহৃ দেয়তে পায়। ওই সময় শিশুটির কাটা স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছিল বলে জানান শিশুটির বাবা সোহাগ। এ নিয়ে চিকিৎসক রুনা রহমান ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুর স্বজনদের কথাকাটা কাটি হয়। এক পর্যায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটির স্বজনদের ওপরে তেড়ে আসে। খবর পেয়ে তালতলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শিশুটির বাবা মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল সোহাগ বলেন, শনিবার দুপুরে আলট্রাসনোগ্রাম করতে দোয়েল ক্লিনিকে আমার স্ত্রীকে নিয়ে যাই। আলট্রাসনোগ্রাম করার পরপরই ডাঃ রুনা রহমান আমাকে দ্রুতঅপারেশন করাতে বলেন, নইলে সমস্যা আছে। একই সময়ে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১৮হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হই। ওইদিন রাতে আমার স্ত্রীর অপারেশন করতে গিয়ে ডাঃ রুনা রহমান আমার নবজাতক শিশুর পিঠ কেটে ফেলেছে। অপারেশন থিয়েটারে শিশুটি কান্না করতেছিল। কান্নার কারন জানতে চাইলে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছুই বলেনি। অপারেশনের ২৭ মিনিট পরে শিশুটিকে আমার কাছে দেয়। ওই সময় দেখতে পাই শিশুটির পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কেটে গেছে এবং রক্ত ঝড়ছে। এ নিয়ে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় তারা আমার ওপরে তেড়ে আসেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
দোয়েল ক্লিনিকের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রুনা রহমান বলেন, আমিতো শিশুটিকে মেওে ফেলি নাই, মেরে ফেলেছি? এইটুকু কাটলে কি মানুষ মারা যায়?
দোয়েল ক্লিনিকের পরিচালক মোঃ রাসেল মিয়ার সঙ্গে তার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, দোয়েল ক্লিনিক, ডাঃ রুনা রহমান ও নবজাতকের অবস্থা জানতে তালতলী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন। তার প্রতিবেদন পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনার তালতলী থানার ওসি মোঃ শহিদুল ইসলাম খাঁন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৩২:২১ ● ৫৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ