ঝড়-বৃষ্টিতে বইমেলায় নষ্ট হাজারো বই

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » ঝড়-বৃষ্টিতে বইমেলায় নষ্ট হাজারো বই
রবিবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


ঝড়-বৃষ্টিতে বইমেলায় বই নষ্ট
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
ফাল্গুনের প্রথম ভাগে ঝড়-বৃষ্টিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলার হাজারো বই ‘পুরোপুরি নষ্ট’ হয়ে গেছে বলে প্রকাশকরা জানিয়েছেন। ভোর থেকে অল্পসংখ্যক ৩দফায় বজ্রসহ দমকা হাওয়া ও ঝড়-বাদলে মেলার দুই ডজনের বেশি স্টল যার তি হয়েছে এমন হয়েছে বলে মেলার সহ-আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ জানিয়েছেন। ঝড়ো বাতাসে মেলার বেশ কয়েকটি স্টলের ছাঁদ উড়ে গেছে। কোনো কোনোটিতে টিনের ফাঁক গলে পানি পড়ে সয়লাব হয়েছে। ঝড়ো বাতাসে পর্দা উড়ে পানি ঢুকেছে স্টলে। তবে সবচেয়ে বেশি যার তি হয়েছে এমন হয়েছে মেলার শিশু চত্বর। বিকাল পর্যন্তও সেখানে পানি জমে আছে। ফরিদ আহমেদ বলেন, “ঝড়ে বইমেলায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে। হাজারো বই একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে দেখেছি আমি।” প্রকাশক সমিতির প থেকে য়তির পরিমাণ নিরূপনে পেশা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ফাল্গুনের প্রথম ভাগে ঝড়ো বৃষ্টির আভাস থাকায় বাংলা একাডেমি শাসনকর্তা আগেভাগেই সতর্ক করে দিয়েছিল প্রকাশকদের। শনিবার সন্ধ্যা থেকে মাইকিংও সাধন হয় গ্রন্থমেলা চত্বরে। প্রকাশকরা প্রস্তুতি নিলেও তা ‘পর্যাপ্ত ছিল না’ বলে মনে করেন প্রকাশ সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ। যেসব স্টল একেবারেই ধসে পড়েছে, তাদের স্টল নির্মাণে ত্রুটির বলেছেন তিনি। ফরিদ আহমেদ জানান, ঝড়ো বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি যার তি হয়েছে এমন হয়েছে বইমেলার শিশু চত্বর। বাংলা একাডেমির ভেতরে বহেরা তলায় লিটল ম্যাগ চত্বরেও বেশ সামান্য স্টল যার তি হয়েছে এমন হয়েছে। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অন্যপ্রকাশ, অ্যাডর্ন, মাওলা ব্রাদার্স, ইউসিএল, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, অন্বেষা, মূর্ধন্যসহ অনেকগুলো স্টল যার তি হয়েছে এমন হয়েছে ঝড়-বাদলে।

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান শায়ক জানান, তার প্রকাশনীর ৩০০ বই ভিজে নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, “মেলায় বড় প্রকাশন (প্যাভিলিয়নগুলো) খোলা জায়গায় পড়েছে। দমকা হাওয়ার ঝাপটা তাই বেশি লেগেছে প্যাভিলিয়নে।”
উৎস প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা সেলিম বলেন, তার প্রকাশনীর চার শতাধিক বই একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।

“দু-তিন ফোঁটা পানি পড়লেই তো বই নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে এত পানি ঢুকেছে! আমার প্রায় ৪০০ বই একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির জন্য আগের রাতে সব ঢেকেঢুকেই গিয়েছিলাম। অথচ ঝড়ো বাতাসে ত্রিপল উড়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে!” অন্যপ্রকাশের স্টলও যার তি হয়েছে এমন হওয়ার উক্তি জানিয়েছে সেখানকার বিক্রয়কর্মী টিপু। তিনি বলেন, “স্টলের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বই একেবারে ভিজে গেছে। প্যাভিলিয়নের অবস্থাও বাজে। সব ঢেকেঢুকে গিয়েছিলাম রাতে। সকালে এসে দেখি ত্রিপল উড়ে দূরে পড়ে আছে। বই ভিজে একাকার।” ‘বাবুই’ প্রকাশনীর পাঁচ শতাধিক বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে বলে এর মালিক মুকুল মজুমদার জানিয়েছেন। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর বিকাল ৩টায় মেলা শুরু হলেও গ্রন্থমেলার শিশু চত্বরে পানি জমেছিল বলে জানান শিশু চত্বরের বাবুই প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী কাদের বাবু। শিশু বাল্য ও যৌবনের মধ্যবর্তী বয়সী ছেলে প্রকাশনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা বাবু বলেন, শিশু চত্বরের শিশু রাজ্য স্টলটি একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। এ ছাড়া কালান্তর, মাহি, চিলড্রেনস কর্নার ও ফুলকিসহ অনেকগুলো স্টল যার তি হয়েছে এমন হয়েছে।” বাবু বলেন, “প্রচুর বই ভিজে গেছে। য়তির পরিমাণ শিশু চত্বরেই সবচেয়ে বেশি। দুপুর গড়িয়ে এখন বিকাল হয়ে গেছে। তবুও শিশু চত্বরে পানি জমে আছে।

প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদও শিশু চত্বর নির্মাণে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “মেলার শিশু চত্বরটি অবহেলিত, তা প্রমাণিত হল। সিসিমপুরের স্টলের সামনে ইট বসানো হয়নি। সেখানে পানি জমে আছে। মেলায় আগত কেউ সেখানে যেতে পারছেন না। লিটল ম্যাগ কর্নার দেখভালের দায়িত্বে থাকা বাংলা একাডেমির কাজের ব্যাপারে প্রধান ব্যক্তি আমিনুর রহমান সুলতান বলেন, ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টিতে লিটল ম্যাগ চত্বরেও বেশ সামান্য বই ভিজেছে। তবে সেখানে য়তির পরিমাণ তুলনামূলক কম। নান্দনিকতার জন্য বইমেলায় উভয় অংশে সাঁটানো ব্যানার, ফেস্টুনগুলোও মাটিতে লুটিয়েছে।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৪:৫৬ ● ১২১২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ