বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় নোয়াখালীতে শিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় নোয়াখালীতে শিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন
শুক্রবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


নোয়াখালী
নোয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি ॥
জাতীয় হেল্পলাইন ‘৯৯৯’ এ ফোন করে তৃতীয় শ্রেণির এক শিার্থীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় এক মাদ্রাসা শিক ও মসজিদের ইমামকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। আহত অবস্থায় মাদ্রাসা শিক তারিফুল মাওলাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আহত ইমাম মিনহাজুল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার আহত মাদ্রাসা শিক হাতিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাতিয়ার দুর্গম চর ১ নম্বর হরণি ইউনিয়নের পূর্ব রসুলপুর গ্রামের ‘পুলিশের দোকান’ সংলগ্ন সাবের আহম্মদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম ও থানা ওসি কামরুজ্জামান শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নির্যাতনের শিকার হওয়া মাদ্রাসা শিক তারিকুল মাওলা এ ব্যাপারে হাতিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে।

মাদ্রাসা শিক তারিফুল মাওলা জানান, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যেক উপজেলায় দু’টি করে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা স্থাপন করেন। তার একটি হাতিয়ার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ১ নম্বর হরণি ইউনিয়নের পূর্ব রসুলপুরে স্থাপন করা হয়। দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে ওই মাদ্রাসায় তিনি শিকতা করেন। তার মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী পূর্ব রসুলপুর গ্রামের সাবের আহম্মদের মেয়ে নাজমা আক্তারের (১৩) সঙ্গে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই দিন (মঙ্গলবার) তিনি ন্যাশনাল হেল্পলাইন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান।

নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তেেপ মেয়েটির বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। ওই দিন বিকেলে মাদ্রাসা শিক তারিকুল মাওলা এবং স্থানীয় পূর্ব রসুলপুর জামে মসজিদের ইমাম মিনহাজুল ইসলাম একসঙ্গে হাতিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে পূর্ব রসুল গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে আবদুল কাদের, আবদুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আলী মহব্বত, আবদুল জিলানীর ছেলে এনায়েত হোসেন বেচু, সমির উদ্দিন, বাবলু ও কালামসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাদের ওই শিার্থীর বাড়িতে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টর্সলাইটসহ নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক তিনটি স্ট্যাম্প ও দু’টি নীল কাগজে স্বার নেয়। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম বলেন, বিষয়টি জেনে আমি মামলা করতে বলেছি। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাতিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান শিকদার জানান, ওই শিক থানায় আসার পর তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৫:২০ ● ৫০৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ