দেশের সব মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি

প্রথম পাতা » জাতীয় » দেশের সব মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি
বৃহস্পতিবার ● ১৭ জানুয়ারী ২০১৯


দেশের সব মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)দেশের সব মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের আওতায় আনতে যাচ্ছে। ফলে মোবাইল ফোনকেন্দ্রি ক অপরাধ দমন, হ্যান্ডসেট চুরি, অবৈধ আমদানি ও নকল হ্যান্ডসেট বিক্রি বন্ধ হবে। হ্যান্ডসেট নিবন্ধনে গ্রাহকদের খুব বেশি কিছু করতে হবে না। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোই পুরো প্রক্রিয়াটির কাজ করবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এ বিষয়ে খসড়াও তৈরি করেছে। বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে অবৈধ পথে আমদানি হয় মোবাইল ফোনের ৩০ শতাংশ। তাতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়। পাশাপাশি হ্যান্ডসেট চুরি কিংবা হারিয়ে গেলে তা খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। আবার চুরি যাওয়া হ্যান্ডসেট আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে ব্যবহার হলে নিরীহ গ্রাহক ফেঁসে যেতে পারে। সেজন্য দেশে যে হ্যান্ডসেটগুলো বৈধভাবে আমদানি হচ্ছে কিংবা স্থানীয়ভাবে সংযোজন বা উৎপাদিত হচ্ছে সেগুলোর ১৫ ডিজিটের স্বতন্ত্র আইএমইআই নম্বর নিয়ে একটি বৈধ ফোনের ডাটা বেইস তৈরি করা হবে। তাতে মানুষ যখন মোবাইল ফোন কিনতে যাবে তখন তারা ওই সেটের আইএমইআই নম্বর দিয়ে সেটটি বৈধ নাকি অবৈধ জানতে পারবে। তাছাড়া বিটিআরসি তাদের ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (ইআইআর) খসড়া নির্দেশনা তৈরি করবে, যার আওতায় দেশের প্রতিটি সক্রিয় সেটকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র জানায়, মোবাইল সিম নিবন্ধনে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করার সুফল মিলেছে। তাতে অপরাধ অনেকটা কমেছে। হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করলে সেক্ষেত্রে আরো উন্নতি হবে। আগে থেকেই সিমের সঙ্গে এনআইডি সংযুক্ত করা আছে। এখন মোবাইল হ্যান্ডসেটের মধ্যে থাকা ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর মিলিয়ে নতুন আরেকটা ডাটা বেইস করবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ইআইআর ডাটা বেইস। ওই ডাটা বেইসের জন্য গ্রাহককে কিছুই করতে হবে না। সব তথ্য যেহেতু মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে আগে থেকেই আছে, তারা এখন শুধু তিনটি বিষয়কে এক করে একটি ডাটা বেইস তৈরি করে বিটিআরসির কাছে হস্তান্তর করবে।
সূত্র আরো জানায়, মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে বিটিআরসির নির্দেশনা জারির দুই মাসের মধ্যে ইআইআর সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে হবে। আইএমইআই নম্বর না থাকা হ্যান্ডসেট ওই সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তেমন হ্যান্ডসেটের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তিনটি শ্রেণিতে ইআইআর ডাটা বেইসে হ্যান্ডসেটগুলো থাকবে। ব্ল্যাক, হোয়াইট ও গ্রে। হোয়াইট বলতে বোঝানো হয়েছে বৈধভাবে আমদানি করা, বৈধভাবে দেশে তৈরি ও বিটিআরসিতে নিবন্ধিত হ্যান্ডসেট। গ্রে শ্রেণিতে রাখা হবে সতর্কতার তালিকায় থাকা হ্যান্ডসেট। ওই শ্রেণিভুক্ত হ্যান্ডসেট শুধু নির্দিষ্ট সিমে কাজ করবে। ওসব হ্যান্ডসেট গ্রাহকদের নিবন্ধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওই সময় নির্ধারণ করে দেবে। তাছাড়া ব্ল্যাক শ্রেণিতে থাকবে চুরি হওয়া, আইএমইআই মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল আইএমইআই ও কিস্তিতে কেনা হ্যান্ডসেটের মূল্য পরিশোধ করা হয়নি তেমন আইএমইআই নম্বর। তার বাইরে কিছু নম্বর ভিআইপি তালিকায় থাকবে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে উপহার হিসেবে নিয়ে আসা হ্যান্ডসেট অপারেটরদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে ক্রয় রসিদ বা অন্যান্য মূল দলিল দেখিয়ে নিবন্ধন করা যাবে। আবার হ্যান্ডসেট বিক্রি করতে চাইলে অপারেটরদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে এনআইডি থেকে আইএমইআই অনিবন্ধন করা যাবে। যে ওই হ্যান্ডসেট কিনবে, সে তার নামে সেটি নিবন্ধন করে নিতে পারবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ইআইআর ডাটা বেইস তৈরি করবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। পওে সেটি জাতীয়ভাবে ইআইআরের সঙ্গে যুক্ত হবে। এ ব্যবস্থা।গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও সরকার- সবার জন্যই সহায়ক হবে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৬:৪২ ● ৫৬৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ