
আল-আমিন হোসাইন, সাগরকন্যা প্রতিবেদক, নাজিরপুর (পিরোজপুর)
শীতের আগমনী বার্তা শুরু হতেই পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন আগাম খেজুর গাছ পরিচর্যায়। দিনে এখনও গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই শীতের আমেজ, আর সকালে শিশির ভেজা পথ জানিয়ে দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি।
নাজিরপুর উপজেলার বুইচাকাঠী গ্রামের গাছি বিনয় শিকদার সাগরকন্যাকে জানান, এ বছর তিনি ৫ কুড়ি (একশত) খেজুর গাছ পরিচর্যার কাজ শুরু করেছেন। আগাম রস আহরণের আশায় এখন থেকেই গাছিরা হাতে দা আর কোমরে ডোঙ্গা বেঁধে খেজুর গাছ পরিষ্কার ও চাঁচের কাজ করছেন।
গাছিরা বলেন, শীত যত বাড়বে, তত বাড়বে খেজুরের রসের মিষ্টতা। এই রস থেকেই তৈরি হয় ঝোলা গুড়, দানা গুড়, নলেন গুড় ও পাটালি- যার গন্ধে ভরে যায় শীতের সকাল। খেজুরের রস ও গুড় ছাড়া বাঙালির পিঠা-পায়েসের উৎসব যেন অসম্পূর্ণ।
ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ চাঁচ দিয়ে কয়েক সপ্তাহ পর নলি স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হবে রস আহরণ। এবছর সময়মতো শীত আসায় নাজিরপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে গাছিরা আগেভাগেই গাছ প্রস্তুত করছেন। আগাম রস ও গুড় পেলে গাছ মালিকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ছোট-বড় নানা আকৃতির গাছে ঝুঁকি নিয়ে গাছিরা কাজ করছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কাকডাকা ভোরে রস সংগ্রহ, আর সন্ধ্যায় গাছ কাটার কাজ চলে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
স্থানীয়রা সাগরকন্যার এই প্রতিবেদককে জানান, একসময় পতিত জমি, ক্ষেতের আইল, রাস্তার ধারে সারি সারি খেজুর গাছ ছিল। এখন জলবায়ু পরিবর্তন ও সময়ের বিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী গাছ বিলুপ্তির পথে। তবুও শীতের আগমনে খেজুর রসের গন্ধে আবারও জীবন্ত হয়ে উঠছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই অংশ।