
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, গলাচিপা (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর গলাচিপায় আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্যামা বা কালীপূজা জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে।
পৌরাণিক শাস্ত্রমতে, কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দেবী কালীর আবির্ভাব ঘটে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দেবী কালী জগতের সব অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির জাগরণ ঘটান। এই বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা প্রত্যাশা করেন-দেবীর কৃপায় পৃথিবীজুড়ে ন্যায়, আলো ও শান্তির বিস্তার ঘটবে। সোমবার রাতে (২০ অক্টোবর) গলাচিপা কেন্দ্রীয় কালী মন্দির প্রাঙ্গণ সেজে ওঠে রঙিন আলোকসজ্জায়। ধূপ, প্রদীপ, আরতি ও ভক্তি সংগীতের সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ভক্তরা দিনভর উপবাস থেকে সন্ধ্যায় দেবী মূর্তির সামনে আরতি ও প্রার্থনায় অংশ নেন। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ ও মনোজ্ঞ আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, দেবী কালী শক্তি, সময় ও রূপান্তরের প্রতীক। তিনি অজ্ঞতা ও অন্ধকার দূর করে জ্ঞান, আলো ও ন্যায়ের প্রতিফলন ঘটান। বিশ্বাস করা হয়, যখন সৃষ্টিজগৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে, তখন দেবী কালী মহাশক্তিরূপে আবির্ভূত হয়ে অসুর বিনাশ ও মানবকল্যাণে প্রকাশিত হন।
দেবী কালী কেবল ধ্বংসের প্রতীক নন-তিনি ন্যায়ের রক্ষক, শক্তির উৎস এবং মায়ের মমতার প্রতিরূপ। তাঁর পায়ের তলে পরাজিত হয় অশুভ শক্তি, আর আলো ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র মানবজাতির প্রতি।
উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে নতুন উৎসাহ ও ভক্তির সঞ্চার ঘটিয়েছে।
দেবী কালীর পূজার মাধ্যমে আমরা অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, আর অশুভের বিরুদ্ধে শুভের জয়ধ্বনি উচ্চারণ করি-বলেন এক আয়োজক।
এসডি/এমআর