রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওগুলোর কার্যক্রমে কঠোর নজরদারির নির্দেশ

প্রথম পাতা » লিড নিউজ » রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওগুলোর কার্যক্রমে কঠোর নজরদারির নির্দেশ
বুধবার ● ১৩ মার্চ ২০১৯


সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর (বেসরকারি সংস্থা) কার্যক্রম কঠোর পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির মধ্যে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, অনেকস এনজিও রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছে। কিন্তু দেখা গেছে যে, এখন পর্যন্ত এনজিওগুলো দেড়শ কোটি টাকার হোটেল ভাড়া দিয়েছে। আসলে তারা বিদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য টাকা এনে কাজ করে। কিন্তু দেখা যায় তাদের (রোহিঙ্গা) জন্য এর ২৫ শতাংশও খরচ হয় না। ৭৫ শতাংশ-ই খরচ হয়ে যায় যারা এগুলো তদারকি করে তাদের পেছনে। আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, অনেক এনজিও ইল-মোটিভ (খারাপ উদ্দেশ্য) নিয়ে কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়িটি খতিয়ে দেখতে কঠোর নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে স্থানান্তরের জন্য সব প্রক্রিয়া এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যেকোনো সময় তাদের সেখানে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু হতে পারে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তাদের (রোহিঙ্গা) কোথায় রাখা হবে সেটা বাংলাদেশের ব্যাপার, বিদেশের কোনো বিষয় নয়। মোজাম্মেল হক আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশ থেকে যে টাকা আসছে তা কিভাবে খরচ করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো এনজিও অনিয়ম করছে তাদের নামসহ তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, তাদের স্থানান্তরের ব্যাপারে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা তরান্বিত করতে কাজ চলছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া এদেশর দায়িত্ব। তাদের কোথায় রেখে নিরাপত্তা দেওয়া হবে, রোহিঙ্গারা কোথায় থাকবে সেটা অন্যকোনো দেশের বিষয় না, সেটা বাংলাদেশের বিষয়। আমাদের সরকার সাধ্য মতো চেষ্টা করছে বসবাসের উপযোগী কোনো জায়গায় নেওয়ার। ভাসান চরে যেখানে তাদের স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সে জায়গা উপযোগী হয়েছে। যে কোনো সময় তাদের স্থানান্তর শুরু হতে পারে। একদিনে তো আর নেওয়া যাবে না। পর্যায়ক্রমে নিতে হবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইয়াবা যারা আনে আমরা চেষ্টা করছি তাদের দমনকরা, ইয়াবা আনা বন্ধ করা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী চেষ্টা করছে, বর্ডারে বিজিবি, কোস্ট গার্ড দায়িত্ব পালন করছে। তাদের কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা বাইরে থেকে মাদক দ্রব্য আনে তাদের প্রতিহত করতে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে তাদেরও নিবৃত করার চেষ্টা চলছে। মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আগামি সভায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়রদেরও রাখা হবে। সিটি করপোরেশনের সহযোগিতা ছাড়া যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আইন শৃঙ্খলা যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। জঙ্গিবাদকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সভায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন শঙ্খলা বাহিনী একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কমিশনকে সহযোগিতা করায় ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৭:৪৩ ● ৩৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ