বামনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে গরু ছাগলের বাস!

প্রথম পাতা » বরগুনা » বামনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে গরু ছাগলের বাস!
শুক্রবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৩


বামনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে গরু ছাগলের বাস!

বামনা ( বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনায় বামনায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়েও সেখানে বসবাস করছেন না বেশ কিছু সুবিধাভোগী। এ সুযোগে তালাবদ্ধ এসব ঘরের বারান্দায় এখন গরু-ছাগল পালন করছেন স্থানীয়রা।
বামনা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার সবচেয়ে ছোট এ উপজেলায় ২০২১ সালের ২৩ জুন ভূমি ও গৃহহীন ২৫৯ পরিবারের প্রত্যেককে প্রকল্পের আওতায় উপহারের ঘরের চাবি দেওয়া হয়। আর চলতি বছরের ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।
নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৪১টি ঘর গৃহহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
লক্ষিপুরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ৪১টি ঘরের ২৫ টিতে সুবিধাভোগীরা বসবাস করছেন। বাকি ১৬টি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর মালিক অনেকেই এখানে বসবাস করছেন বলে জানান প্রকল্পের বাসিন্দারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম জানান, রুবি বেগম নামে একটি ঘর বরাদ্দ হওয়ার পর একদিনের জন্যও তিনি ওই ঘরে যাননি। এক বছর খালি থাকার পর ওই ঘরে স্থানীয় বাসিন্দারা গরু ও ছাগল লালন পালন করছেন। এ ছাড়াও ওই এলাকার জহির নামে এক বাসিন্দা ঘর পেয়েছেন। কিন্তু তার বসতভিটা ও ফসলি জমি থাকায় ঘর নিয়েও সেখানে বসবাস করছেন না। এমনই আরেকজন মালেক মিস্ত্রি। জমি এবং ঘর থাকতেও তিনি প্রকল্পে ঘর নিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেখানে বসবাস না করে তালাবদ্ধ রেখেছেন। আর বাকি বাসিন্দারা কর্মসংস্থানের তাগিদে চলে গেছেন শহরে।
একই ইউপির আরেক সদস্য মাসুম বলেন, বর্তমানে যারা বসবাস করছেন তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। পাশের হলতা নদী থাকায় সামান্য জোয়ারের পানি বাড়লেই ঘরগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। নদীর পাড়ে উপযুক্ত বেড়িবাঁধ না থাকায় সব সময় আতঙ্কে থাকেন এখানকার বাসিন্দারা। অনেক কষ্টে বসবাস করতে হয় তাঁদের। সুপেয় পানির গভীর নলকূপটিও ১ বছর ধরে নষ্ট রয়েছে। কোনো কাজ না থাকায় ছেলেমেয়েদের মুখে দুমুঠো খাবার অনেক সময় জোটে না। এ কারণে অনেকেই ঘরে তালা দিয়ে চলে গেছে শহরে কাজের সন্ধানে।
বুকাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ বলেন,আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আমরা শুধু প্রকৃত ভূমিহীনদের সুপারিশ করেছি। শুনেছি লক্ষিপূরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে অনেকে বসবাস করছেন না। যদি কেউ বসবাস না করে তবে তাঁদের বাদ দিয়ে তালিকা থেকে প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্তরা হাওলাদার বলেন, এ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর সুবিধাভোগীরা কোনো অনিয়ম করতে পারবে না। যাঁরা বসবাস করছেন,বরং ঘরগুলো তালাবদ্ধ করে রেখেছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করে,নতুন ভূমিহীনদের ঘর দেওয়া হবে।


এইচআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫২:৫০ ● ৬২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ