
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, গৌরনদী (বরিশাল)
গৌরনদী উপজেলা পরিষদে কর্মরত সরকারি কর্মচারীরা বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো ও বিভিন্ন ভাতা পুনর্নির্ধারণসহ ১২ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ গৌরনদী উপজেলা শাখার নেতারা স্মারকলিপিতে ১১ থেকে ২০ গ্রেডে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন-পদবী বৈষম্য, বাজারদর বৃদ্ধি এবং পরিবার নিয়ে মানবিক জীবনযাপনের সংকটের বিষয় তুলে ধরেন। তারা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে-কমিশনের রিপোর্ট জমা এবং ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশের দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মচারীদের নিম্ন গ্রেডে বেতন, পদবী ও সুবিধায় প্রকট বৈষম্য রয়েছে। ১ম থেকে ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বেতন সুবিধা বৃদ্ধি পেলেও ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা তা থেকে বঞ্চিত। এমনকি সচিবালয়, হাইকোর্ট বা ইউজিসির মতো প্রতিষ্ঠানে গ্রেড ও পদবী পরিবর্তন হলেও মাঠ প্রশাসন ও দপ্তর-অধিদপ্তরের কর্মচারীরা সেই সুবিধা পাননি।
তারা দাবি করেন, একজন কর্মচারীর পরিবারে গড়ে ছয়জন সদস্য থাকলে বর্তমান সর্বনিম্ন বেতন ৮২৫০ টাকায় খাবার, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও সামাজিক ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব। এতে প্রতিনিয়ত শ্রেণিভিত্তিক বৈষম্য ও সামাজিক মর্যাদাহানি বাড়ছে।
স্মারকলিপিতে উত্থাপিত প্রধান দাবিগুলো হলো-
বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, ১:৪ অনুপাতে ১২টি গ্রেড পুনর্গঠন, সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, মেডিকেল ভাতা ৫ হাজার টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩ হাজার টাকা, টিফিন ভাতা ৩ হাজার টাকা, শিক্ষা ভাতা প্রতি সন্তান ৩ হাজার টাকা, ঝুঁকি ভাতা মূল বেতনের ৩০ শতাংশ, বাড়িভাড়া ভাতা ৮০ শতাংশ, বৈশাখী ভাতা শতভাগ, বিজয় দিবস ভাতা চালু, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসর বয়স ৬২ বছর নির্ধারণ, সকল দপ্তর-অধিদপ্তরে পদবী পরিবর্তন ও এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটি প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুযোগ তৈরি করলেও ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য কার্যকর কোনো প্রস্তাব দেয়নি। এতে গ্রেডভিত্তিক বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।