
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া গ্রামে নিজ বসতঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ফাঁস দিয়ে তারা আত্মহত্যা করেছেন। তবে কেন তারা এমন পথ বেছে নিলেন- তা এখনও পরিষ্কার নয়।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে রাকিব প্যাদা (৩০) ও তার স্ত্রী সোহাগী বেগমের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ। এই সময় ঘর থেকে একটি ডায়েরি জব্দ করা হয়। ডায়েরির দুটি পাতায় স্বামী-স্ত্রীর স্বাক্ষরিত চিরকুটে লেখা ছিল-মানসম্মান সব গেছে। বাঁচা (বেঁচে) থাইকা কি হবে?
চিরকুটে আরও লেখা ছিল- সোহাগীসহ ইচ্ছা মৃত্যু বরণ করবো। আমাদের লাশ যেন ময়নাতদন্ত না হয়। দুইজনের কবর যেন ঘরের পশ্চিম পাশে একসাথে হয়। আমি নিরপরাধী। মানসম্মান সব গেছে। বাঁচা থাইকা কী হবে। আমার পোলার দিকে খেয়াল রাখবেন। মা-বাবা ছাড়া আমার পোলা এতিম। আমাদের সবাই মাফ করে দিবেন। বার বছর বিয়ে হয়েছে, এমন খারাপ এখন কেন।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এই চিরকুটের প্রতিটি লাইন এখন প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে- কী এমন সংকট তৈরি হয়েছিল যে সাত বছরের সন্তান রেখে তারা একসাথে মৃত্যুকে বেছে নিলেন? গ্রামবাসীর দাবি, তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হোক।
গ্রামবাসীর বরাতে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশী এক আত্মীয় ঘরে ঢুকে দু’জনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বজনরা চিৎকার করে লাশ নামিয়ে ফেলেন। নিহত দম্পতির একমাত্র ছেলে সাত বছর বয়সী মুজাহিদ।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দফাদার মোশাররফ হোসেন সাগরকন্যাকে বলেন, দুইজনের গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। আমরা যাওয়ার আগেই পরিবারের লোকজন লাশ নিচে নামিয়ে রেখেছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা ছিল। ১০-১২ দিন আগেও ঝামেলা হয়েছিল নাকি।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হাওলাদার বলেন, চিরকুটসহ সব আলামত জব্দ করা হয়েছে। দুইজনের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে, তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।