
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, আমতলী (বরগুনা)
বরগুনার আমতলীতে একটি মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় আলোচনায় গত কয়েকদিন থেকে। অভিযোগ রয়েছে, কুকুয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তারকে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগে জানিয়েছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক দুই লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করে দেন। পরে সেই প্রশ্নেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ করেছেন পরীক্ষার্থী তামান্না ও সাবিনা আক্তার। তারা নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার মহাপরিচালক মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, দুদক, বরগুনা জেলা প্রশাসক ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসাটি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই পদে ১১ জন আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকনের ছেলে রেদওয়ানুল ইসলাম আবির, ভাগ্নে আরিফুর রহমান এবং দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তার।
অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ আল্পনাকে চাকরি দিতে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নেন। এজন্য তিনি তার ছেলে ও ভাগ্নেকেও ওই পদে আবেদন করান। গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা, যেখানে ৯ জন অংশ নেন। পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করেই মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয় অধ্যক্ষের ছেলে, ভাগ্নে ও আল্পনাকে নিয়ে। রবিবার আল্পনা আক্তারকে নিয়োগ দেয়া হয়।
অভিযোগকারী তামান্না ও সাবিনা বলেন, এটি সাজানো পরীক্ষা ছিল। অধ্যক্ষের যোগসাজসে ডিজির প্রতিনিধি প্রশ্ন ফাঁস করে দেন। তাই নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকন সাগরকন্যাকে বলেন, আল্পনাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তবে তিনি দাতা সদস্যের ছেলের বউ কিনা তা জানি না। বিধি মোতাবেক পরীক্ষা হয়েছে।
মাদ্রাসার সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. জিয়াদুল কবির বলেন, তিনজন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, এর মধ্যে আল্পনা প্রথম হয়। তবে তিনি দাতা সদস্যের ছেলের বউ কিনা জানি না।
অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভিযোগ মিথ্যা। নিয়ম মেনে পরীক্ষা নিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।