
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
সোমবার সন্ধ্যা নামতেই কুয়াকাটার আকাশ ঝলমল করে ওঠে। ছোট-বড় ফানুসে ছেয়ে যায় আকাশ। এভাবেই একের পর এক ফানুস উড়িয়ে উৎসব উদযাপন করে কুয়াকাটার রাখাইন নারী-পুরুষরা। আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বিদায় জানিয়ে সত্য ও সুন্দরকে বরণে কুয়াকাটায় বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা উদযাপন করছে অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। এদিন নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে রাখাইনপাড়াগুলোতে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।
সোমবার সকালে বুদ্ধপূজা, সংঘদান, পিণ্ডদান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, শীল গ্রহণ ও প্রদীপপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। সকালে বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে সমবেত হন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ রাখাইন নর-নারীরা। তারা বুদ্ধের উদ্দেশ্যে ফুল, মোমবাতি ও অন্যান্য উপকরণ নিবেদন করেন। দিনব্যাপী চলে নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, আর সন্ধ্যায় আকাশে উড়ানো হয় রঙিন ফানুস।
আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস পালন শেষে শুরু হয় প্রবারণা উৎসব। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকেই প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে শুরু হয় এক মাসব্যাপী কঠিন চীবরদান উৎসব।

কুয়াকাটা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ইন্দ্রবংশ মহাথেরো বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা আত্মশুদ্ধি ও অশুভ পরিহারের এক অনন্য দিন। এই উৎসব মানুষকে সত্য ও শান্তির পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে।
পর্যটকসমৃদ্ধ কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পাশে অবস্থিত বৌদ্ধবিহার ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কুয়াকাটা জোনের ইন্সপেক্টর তাপস চন্দ্র রায় বলেন, উৎসবে আগত ভক্ত ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।