
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সিকদারকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর কাশিপুর বিল্ববাড়ীতে নিজ বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০-৫০ জনের একটি দল বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। একপর্যায়ে লিটনকে কুপিয়ে শরীর থেকে ডান হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় লিটনের মা রাবেয়া বেগম (৫৮) ও বোন মুন্নি সিকদার (৩২) আহত হয়েছেন। নিহতের পরিবারের দাবি, ঘটনার জন্য ভগিনীপতি জাকির হোসেন ও তার অনুসারীরা দায়ী।
লিটনের বোন মুন্নি জানান, জাকির ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় পারিবারিক বিরোধ তৈরি হয়। জাকির তাকে মারধর করত, এতে ভাই লিটন প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা বাড়ে।
স্থানীয়রা বলেন, ১০-১২ দিন আগে লিটন জাকিরকে মারধর করেন। পুলিশ এসে জাকিরকে উদ্ধার করে। তখন মামলা হলে লিটন গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান। বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফেরার পরই তার ওপর হামলা হয়।
ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রতিরোধ করেনি বলে অভিযোগ। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, এসআই শহিদুল ঘটনাস্থলে ছিলেন। এক পর্যায়ে এক বাসিন্দা তাকে অনুরোধ করেন, লিটনকে সরিয়ে নেন, না হলে মেরে ফেলবে।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, হামলাকারীরা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র হাতে লিটনের বাড়িতে প্রবেশ করছে। কেউ একজন চিৎকার করে বলছে, লিটনরে মাইরা ফালা, শ্যাষ কইরা দে।
এসব ঘটনার পরও এসআই শহিদুল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। আহত মুন্নিও অভিযোগ করেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় তার ভাই খুন হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এসআই শহিদুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিমানবন্দর থানার ওসি জাকির হোসেন সিকদার বলেন, এসআই শহিদুল তদন্তে সেখানে গিয়েছিলেন। তখন পর্যন্ত হামলা শুরু হয়নি। দুই পক্ষের বিরোধের খবর পেয়ে আমরা পরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে থানায় আনা হয়েছে।
হত্যা ঘটনায় মুন্নি সিকদার বাদী হয়ে ৪০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।