ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি

প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি
শুক্রবার ● ২৫ জানুয়ারী ২০১৯


প্রতীকী ছবি
ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর নেতৃত্বে ছিলেন-এমন অনেকেই আজ জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। দেশের ছাত্ররাজনীতির এই কেন্দ্রই উপেক্ষিত থেকেছে গত ২৮ বছর। কোনো নির্বাচন হয়নি। খোলা হয়নি ডাকসু ভবন। একসময় বিষয়টি আদালতে গড়ায়। আদালতের মাধ্যমেই কেটে যায় নির্বাচনের বাধা। গঠনতন্ত্রের ৮(ই) ধারা অনুযায়ী ডাকসুর সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। আগামি ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যই এটি একটি বড় খবর। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৬ জুন। ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বার উদ্যোগ নিলেও ছাত্রসংগঠনগুলোর নানা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি। ২৮ বছর পর বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর পর থেকেই ক্যাম্পাসে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। স্বাধীন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রকাশের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে বিকশিত হবে নির্বাচিত নতুন নেতৃত্ব। ডাকসুর সাবেক নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ছাত্রসংগঠনগুলোও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এটি শুভ লক্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে শুধু ভোটগ্রহণের স্থান ছাড়া অন্য সব বিষয়ে একমত হয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলো। এরইমধ্যে ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার জন্য ১৫ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদও গঠন করা হয়েছে।
সুন্দরভাবে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গত কয়েক দিন ছাত্রসংগঠনগুলো যেভাবে বিভিন্ন বৈঠকে হাজির থেকে বক্তব্য দিয়েছে, তাতে আশা করা যায়, সহাবস্থান নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল দেওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে। শ্রেণিকক্ষেও প্রচারণা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ডাকসু নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ডাকসু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের ছাত্ররাজনীতি প্রাণ ফিরে পাকÑএটিই আমাদের প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩১:৪৪ ● ৭০৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ