স্বাস্থ্যসেবার এ কী হাল ! ব্যবস্থা নিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে

প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » স্বাস্থ্যসেবার এ কী হাল ! ব্যবস্থা নিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে
সোমবার ● ২১ জানুয়ারী ২০১৯


প্রতীকী ছবি

চমকে ওঠার মতোই খবর। চিকিৎসক নয়, রোগীর জরায়ুর টিউমার অপসারণের অস্ত্রোপচার করতে গিয়েছিলেন দুজন নার্স। একপর্যায়ে যখন চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়, ততক্ষণে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। দায় এড়াতে রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এক প্রসূতিকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার এক ধাত্রীর ধাওয়ার মুখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একটি গাছের নিচে তিনি সন্তান প্রসব করেন। এটা কেমন করে সম্ভব? যেখানে সেবার জন্য যাওয়া হবে, তারা সেবা না দিয়ে উল্টো রোগীকে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লিনিকে চিকিৎসক নয়, নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচারের কাজ চালানো হয়? এসব কি দেখার কেউ নেই?
মাগুরা শহরের পলি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগেই জানিয়ে দেওয়া যেত তাঁর চিকিৎসা ওই প্রতিষ্ঠানে সম্ভব কি না। কিন্তু তা না করে নার্স দিয়ে তাঁর অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করা হয়েছে। ক্লিনিকের মালিক বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, ভুলবশত এ রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ভুলের খেসারত কে দেবে? রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনরা। রোগী ভর্তি, টাকার চুক্তি ইত্যাদি বিষয় বলে দিচ্ছে চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করতেই এই রোগীকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল। দেশের অনেক ক্লিনিকের বিরুদ্ধেই এ ধরনের অভিযোগ আছে। যেসব ক্লিনিকে এমন ঘটনা ঘটে, সেসব ক্লিনিক কেন একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে না? বিষয়টি নিয়ে এখন সবাইকে ভাবতে হবে। আবার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে ঘটনা ঘটেছে, তা কি কল্পনা করা যেতে পারে। একজন প্রসূতিকে চিকিৎসা না দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া যায় কি? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাব কী? শুধু তদন্ত কমিটি কিংবা শোকজ করে কোনো লাভ হবে না। এসব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।
চিকিৎসা বাণিজ্যের হাতিয়ার নয়, এর মূল লক্ষ্য হবে সেবা। এখানে চিকিৎসক থেকে শুরু করে সবাইকে সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে এনে বাংলাদেশ যখন বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, তখন এ ধরনের সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক দেশের সুনামেরও ক্ষতি করছে। কাজেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৯:৩৯ ● ৬৩৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ