পুলিশে পদোন্নতি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ক্ষোভ

প্রথম পাতা » মুক্তমত » পুলিশে পদোন্নতি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ক্ষোভ
শুক্রবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১


প্রতীকী ছবি

মন্তব্য প্রতিবেদন॥

পুলিশের মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এমনসব অভিযোগে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। চাপা অসন্তোষ বাড়লেও প্রকাশ্যে মুখ খুলছে না কেউ। এর মূল কারণ হিসাবে দায়ী করা হচ্ছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, পুলিশের নিয়োগ পদ্ধতির ক্রটির কারণে দেশের সেরা মেধাবী ছাত্ররা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসাবে চাকুরিতে নিয়োগ পেয়ে অনেকে পুলিশ সুপার হিসাবে অবসর গ্রহণ করে, তখন তার সহপাঠি অন্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে সচিব পদমযর্দার কর্মকর্তা হিসাবে অবসরে যাচ্ছেন। অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে যে হারে সরাসরি এএসপি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সে হারে এসপি, ডিআইজি, আইজি’র পদমর্যদার পদ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এতো ছোট একটি দেশে এটা করা সম্ভবও নহে। যদিও  বিভিন্ন কৌশলে পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট তৈরি করে নতুন নতুন পদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি সুপার নিউমরিক পদোন্নতি দেওয়া হলেও এতেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এতে আরো প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। চাকুরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সাব-ইন্সপেক্টর ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা একই। কিন্তু সর্বোচ্চ শিক্ষগতযোগ্যতা নিয়ে সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকুরিতে যোগদান করে চাকুরি জীবনে একটিমাত্র পদোন্নতি নিয়ে ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) হিসাবে চাকুরি হতে অবসরে যাচ্ছে। ফলে একই পদে দীর্ঘদিন কর্মরত পুলিশ সদস্যরা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে আরো বেপরোয়া ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

কয়েকজন পুলিশ ইন্সপেক্টর/সাব-ইন্সপেক্টর জানান, ইন্সপেক্টর একই পদে ১৫/২৮ বছর, কোন পদোন্নতি নেই, বেতন স্কেলের পরিবর্তন না থাকাটাও অবমানকর। সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর ১০ম গ্রেডে যোগদান করে ১০/১৫ বছর পর পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হয়ে ৯ম গ্রেডে বেতন পেয়ে শেষ বয়সে এসে ভাগ্যবান গুটিকয়েকজন এএসপি পদে পদোন্নতি পেয়ে আবার সেই ৯ম গ্রেডে থেকেই অবসরে যাচ্ছেন। সারাজীবনে শুধুমাত্র একটি গ্রেড পরিবর্তনমাত্র। সম্প্রতিক সময়ে ২১৮টি এএসপি পদ বিলুপ্ত করে উচ্চতর পদ সৃষ্টির ফলে এই স্বপ্নও ভবিষ্যতে দেখার সম্ভবনা নেই। বাহিনীর কাজে গতিশীলতা আনয়ন, দূর্ণীতিমুক্তকরণ এর সবচাইতে বড় উপায়, বাহিনীর অন্যতম স্তম্ভ পুলিশ ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের পদোন্নতি এবং উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়গুলির সুরহা করা। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে একই পদে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আছে । তারা উভয়েই একই পদমর্যাদার ও একই পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং উভয়েই পরবর্তী পদে বেতন কাঠামোর ৬ষ্ঠ ধাপে পদোন্নতি পায় । কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশ পুলিশের মতো অন্য কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে একই গ্রেডে অর্থাৎ ৯ম গ্রেডের নন-ক্যাডার থেকে ৯ম গ্রেডের ক্যাডার পদে পদোন্নতি নিতে হয়, যা নিয়ম বহিভূত।  বাংলাদেশে অন্য কোনো সরকারি চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে এমন উদাহরণ আছে কিনা জানা নেই! পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি দুইটা মূলত এককই পদমর্যাদার দুইটা পদ, একটা নন-ক্যাডার আর অন্যটা ক্যাডার পদ। কারণ ২০১২ সালে পুলিশ ইন্সপেক্টরদের প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করার ফলে পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি একই পদমর্যাদার পদ হয়ে গেছে। বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরাসরি নিয়োগ হলে এএসপি এবং পদোন্নতির মাধ্যমে হলে পুলিশ ইন্সপেক্টর। যেহেতু দুইটা পদই ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড পদ। সেহেতু এখানে পুলিশ ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি সম্পূর্ণই অমূলক ও সম্পূর্ণই এক ভ্রান্ত ধারণা। পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয়েই নবম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হলেও র্যাং্ক ব্যাচের সমতায়ন না করে পুলিশ ইন্সপেক্টর এক পিপস এবং এএসপি দুই পিপস ব্যবহার করেন, যা মোটেই কাম্য নয়। কেননা একই ডিপার্টমেন্টে দুই নিয়ম চলতে পারে না। তাই র্যাং ক ব্যাচ ও পদের সমতায়ন করতে হবে।  পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয় পদের কর্মকর্তাগণকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পরবর্তী পদোন্নতি দিতে হবে। যেমন বাংলাদেশ পুলিশে টিএসআই ও সার্জেন্ট একই পদমর্যাদার দুইটা পদ‌‌‌ এবং উভয় পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে পরবর্তী একই পদের কর্মকর্তারা হচ্ছে । টিএসআই ২য় শ্রেণী (১০ম গ্রেড) এবং সার্জেন্ট পদও ২য় শ্রেণী (১০ম গ্রেড)। তারা উভয়ই পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হন। তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য হলো একজন অভিজ্ঞতার ঝুলি ভর্তি করে তারপর পদোন্নতি পায়। অপরজন পড়ালেখা একটু বেশি করে সরাসরি ভর্তি হয়। যেহেতু সার্জেন্ট সরাসরি ভর্তি, সবাই তাকে স্বাভাবিক ভাবেই সম্মান করেন একটু বেশি, এটা স্বাভাবিক। তবে তারা কিন্তু পদ মর্যাদায় সমান। যখন ইন্সপেক্টর পদটি ২য় শ্রেণী (১০ম গ্রেড) ছিলো, তখন তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হতো এএসপি পদে (যেটি ০৯ম গ্রেড) এবং ০১টি পিপ্স এর স্থলে ০২টি পিপ্স পরিধান করতে হতো এএসপি(৯ম গ্রেড) হিসেবে। পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয়েই যেহেতু একই গ্রেড অর্থাৎ ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা সেহেতু বাংলাদেশের সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো তাদেরও একই পদমর্যাদা পাওয়ার দাবি উঠেছে। প্রতীকী ছবি

সাগরকন্যা বিশেষ প্রতিবেদন॥

পুলিশের মাঠ পযায়ের পুলিশ সদস্যদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হচ্ছে না এসব নিয়ে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। চাপা অসন্তোস বাড়লেও প্রকাশ্য কেউ মুখ খুলছে না।  আর এর মূল কারণ হিসাবে দায়ী করা হচ্ছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান যে, পুলিশের নিয়োগ পদ্ধতির ক্রটির কারণে দেশের সেরা মেধাবী ছাত্ররা সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) হিসাবে চাকুরিতে নিয়োগ পেয়ে অনেকে পুলিশ সুপার হিসাবে অবসর গ্রহন করে তখন তার সহপাঠি অন্য ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে সচিব পদমযর্দার কর্মকর্তা হিসাবে অবসরে যাচ্ছে। অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে যে হারে সরাসরি এএসপি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সে হারে এসপি, ডিআইজি, আইজি’র পদমর্যদার পদ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এতো ছোট একটি দেশে এটা করা সম্ভবও নহে। যদিও  বিভিন্ন কৌশলে পুলিশের নতুন নতুন ইউনিট তৈরি করে নতুন নতুন পদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি সুপার নিউমরিক পদোন্নতি দেওয়া হলেও এতেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এতে আরো প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। চাকুরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সাব-ইন্সপেক্টর ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা একই। কিন্তু সর্বোচ্চ শিক্ষগত যোগ্যতা নিয়ে সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকুরি যোগদান করে চাকুরি জীবনে একটি মাত্র পদোন্নতি নিয়ে ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) হিসাবে চাকুরি হতে অবসরে যাচ্ছে। ফলে একই পদে দীর্ঘদিন কর্মরত পুলিশ সদস্যরা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে আরো বেপরোয়া ও দুর্নীতি গ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

কয়েকজন পুলিশ ইন্সপেক্টর/সাব-ইন্সপেক্টর বলেন, ইন্সপেক্টর একই পদে ১৫/২৮ বছর, কোন পদোন্নতি নেই, বেতন স্কেলের পরিবর্তন নেই, এটা অবশ্যই অবমানকর। সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর ১০ম গ্রেডে যোগদান করে ১০/১৫ বছর পর পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হয়ে ৯ম গ্রেডে বেতন পেয়ে শেষ বয়সে এসে ভাগ্যবান গুটিকয়েকজন এএসপি পদে পদোন্নতি পেয়ে আবার সেই ৯ম গ্রেডে থেকেই অবসর গ্রহণ! সারাজীবনে শুধুমাত্র একটি গ্রেড পরিবর্তন। সম্প্রতিক সময় ২১৮টি এএসপি পদ বিলুপ্ত করে উচ্চতর পদ সৃষ্টির ফলে এই স্বপ্নও ভবিষ্যতে দেখার সম্ভবনা নেই। বাহিনীর কাজে গতিশীলতা আনয়ন, দূর্ণীতিমুক্তকরণ এর সবচাইতে বড় উপায়, বাহিনীর অন্যতম স্তম্ভ পুলিশ ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের পদোন্নতি এবং উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়গুলির সুরহা করা। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে একই পদে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আছে । তারা উভয়েই একই পদমর্যাদার ও একই পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং উভয়েই পরবর্তী পদে বেতন কাঠামোর ৬ষ্ঠ ধাপে পদোন্নতি পায় । কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশ পুলিশের মতো অন্য কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে একই গ্রেডে অর্থাৎ ৯ম গ্রেডের নন-ক্যাডার থেকে ৯ম গ্রেডের ক্যাডার পদে পদোন্নতি নিতে হয়। যা নিয়ম বহিভূত।  বাংলাদেশে অন্য কোনো সরকারি চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে এমন উদাহরণ আছে কিনা, আমাদের জানা নেই! পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি দুইটা মূলত এককই পদমর্যাদার দুইটা পদ একটা নন-ক্যাডার আর একটা ক্যাডার পদ। কারণ ২০১২ সালে পুলিশ ইন্সপেক্টরদের প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করার ফলে পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি একই পদমর্যাদার পদ হয়ে গেছে । বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরাসরি নিয়োগ হলে এএসপি এবং পদোন্নতির মাধ্যমে হলে পুলিশ ইন্সপেক্টর। যেহেতু দুইটা পদই ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড পদ সেহেতু এখানে পুলিশ ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি সম্পূর্ণই অমূলক ও সম্পূর্ণই এক ভ্রান্ত ধারণা ।  পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয়েই নবম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হলেও র্যাং্ক ব্যাচের সমতায়ন না করে পুলিশ ইন্সপেক্টর এক পিপস এবং এএসপি দুই পিপস ব্যবহার করেন। যা মোটেই কাম্য নয়। কেননা একই ডিপার্টমেন্টে দুই নিয়ম চলতে পারে না। তাই র্যাং ক ব্যাচ ও পদের সমতায়ন করতে হবে।  পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয় পদের কর্মকর্তাগণকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পরবর্তী পদোন্নতি দিতে হবে।  যেমন বাংলাদেশ পুলিশে টিএসআই ও সার্জেন্ট একই পদমর্যাদার দুইটা পদ‌‌‌ এবং উভয় পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে পরবর্তী একই পদের কর্মকর্তারা হচ্ছে । টিএসআই ২য় শ্রেণী(১০ম গ্রেড) এবং সার্জেন্ট পদও ২য় শ্রেণী (১০ম গ্রেড)। তারা উভয়ই পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হন। তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য হলো একজন অভিজ্ঞতার ঝুলি ভর্তি করে তারপর পদোন্নতি পায়। অপর জন পড়ালেখা একটু বেশি করে সরাসরি ভর্তি হয়। যেহেতু সার্জেন্ট সরাসরি ভর্তি, সবাই তাকে স্বাভাবিক ভাবেই সম্মান করেন একটু বেশি, এটা স্বাভাবিক। তবে তারা কিন্তু পদ মর্যাদায় সমান। যখন ইন্সপেক্টর পদটি ২য় শ্রেণী (১০ম গ্রেড) ছিলো, তখন তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হতো এএসপি পদে (যেটি ০৯ম গ্রেড) এবং ০১টি পিপ্স এর স্থলে ০২টি পিপ্স পরিধান করতে হতো এএসপি(৯ম গ্রেড) হিসেবে।  আমাদের দাবি পুলিশ ইন্সপেক্টর ও এএসপি উভয়েই যেহেতু একই গ্রেড অর্থাৎ ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা সেহেতু বাংলাদেশের সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো আমাদেরও একই পদমর্যাদা দিতে হবে এবং উভয় পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হবে এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত ডিআইজি ও ডিআইজি পদে পদোন্নতি দিতে হবে। অর্থাৎ পদোন্নতির ধারা যোগ্যতার মাপকাঠিতে সকলের জন্য অবারিত করতে হবে।  সাব-ইন্সপেক্টর ও পুলিশ ইন্সপেক্টরদের জন্য একটি বিধিমালা প্রণয়ন করে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের আওতাভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো পদমর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা অবারিত করতে হবে। আর একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্সপেক্টরদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার পূর্ণ মর্যাদা দিতে হবে। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা কখনোই অধস্তন হয় না । বাংলাদেশের কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা অধস্তন কর্মকর্তা নয় । তাহলে পুলিশ ইন্সপেক্টর অধস্তন কর্মকর্তা নয় । পিআরবি ও পুলিশ আইন সংশোধন করে পুলিশ ইন্সপেক্টর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা করতে হবে।  র্যা বে পুলিশ পরিদর্শকদের উপ-সহকারী পরিচালক পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের সহকারী পরিচালক পদ দেওয়া আছে । এখানে সব থেকে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে অন্যান্য বাহিনীর ২য় ও ৩য় শ্রেণীর সদস্যদের প্রথম শ্রেণীর পুলিশ ইন্সপেক্টরের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।  উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার এবং দীর্ঘ বার বছর ধরে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে পদোন্নতিযোগ্য পুলিশ ইন্সপেক্টরগণ উচ্চতর ( এডিশনাল এসপি) পদে পদোন্নতি না পেয়ে হতোদ্যম হয়ে পড়ছে এবং পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরে নানারকম গুঞ্জন উঠছে ও ফুঁসে উঠছেন তারা।  সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার হতে প্রথম শ্রেণীর ক্যাডারে পদোন্নতি পাচ্ছে।  এইতো যখন পুলিশ ইন্সপেক্টর দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদ ছিল তখনও তো প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার (এএসপি) পদে পদোন্নতি পেয়েছে। এখন পুলিশ পরিদর্শক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হওয়ায় তার পরবর্তী উচ্চপদ হচ্ছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাই পুলিশ পরিদর্শক পদের পদোন্নতিতে তারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ প্রাপ্ত হবেন। সরাসরি এসআই /সার্জেন্ট নিয়োগ পিএসসি’র অধীনে হতে হবে।  সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টরদের ২য় শ্রেণীর কর্মকর্তার পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে রিবন উঠিয়ে এক পিপ্স দিতে হবে । আমাদের পদোন্নতি পিএসসির মাধ্যমে হলে এবং পদোন্নতি ও সিনিয়র স্কেল বিধিমালা প্রস্তুত করা হলে, অন্তত উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির পথ সুগম হবে। বাংলাদেশ সচিবালয় (ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা,২০১৯ এর আলোকে বাংলাদেশ পুলিশ (নন-ক্যাডার) বিধিমালা তৈরী করতে হবে। যেমন বিধিমালা আছে, সচিবালয়ের এও(এডমিনেস্ট্রেটিভ অফিসার), উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমাজ সেবা কর্মকর্তাদের জন্য। আমাদের একই সাথে প্রথম শ্রেনীর নন ক্যাডার এ যোগদান করা অন্য ডিপার্টমেন্ট এর অফিসারেরা এখন ৬ বছরের মাথায় এসে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশের ইন্সপেক্টরদের বেলাতে নবম স্কেল যেন কপালে সীলমোহর এঁকে দিয়েছে। এএসপি থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা সবাই পিএসসি এর অধীনে থাকলে, প্রথম শ্রেণীর পরিদর্শকদের পিএসসি’র অধীনে রাখলে সমস্যা কোথায়? প্রতিবেশী ভারতের পান্জাবে ১৯৯১ সালে এএসআই পদে ভর্তি হয়ে ২০০৯ সালে ডিএসপি এবং ২০১৫ সালে এসপি হয়।  অন্য অনেক রাষ্ট্রে এমন উদাহরণ আছে। আরো একটি উদাহরণ- একজন ২০১০ সালে সোনালি ব্যাংকে অফিসার পদে (২য় শ্রেণী) যোগদান করেন। তিনি ২০১৬ সালে সিনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি পান (যেটা ১ম শ্রেণী)। ২০২০ সালে অর্থাৎ মাত্র চার বৎসর পর তিনি ৬ষ্ঠ গ্রেডে প্রমোশন পান। আর আমরা ১ম শ্রেণী হয়ে প্রহর গুনছি কবে ২০-২৫ বৎসর হবে তারপর আবার ১ম শ্রেণী (৯ম গ্রেড) তে পদোন্নতি পাবো। বাংলাদেশের মতো এত বাজে অবস্থা পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে বলে আমাদের জানা নেই! তাই, সময় এসেছে পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করে দ্রুত এসব উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করার।

আর যদি আন্তরিকতার অভাবে এসব সমস্যা সমাধানে খুবই সমস্যা হয়, তবে নিন্মের ধাপগুলোর যে কোনো একটি ফলো করা যায়ঃ ১. বর্তমানের তিন ধাপের নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে উন্নত দেশের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে শুধুমাত্র কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদান, যাতে ১ম চারটি পদে অটোপ্রমোশন এবং পরবর্তী ধাপে পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতম ব্যক্তিকে প্রমোশন ও চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে আইজিপি পর্যন্ত প্রমোশন প্রদান। ২. সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ বাতিল করে সামরিক বাহিনীর মতো কনস্টেবল ও অফিসার পদে দুই ধাপে নিয়োগ প্রদান, যাতে যার যার শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদনকারী আবেদন করতে পারে। ৩. নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা, সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর পদে ঢুকলে সারাজীবন ১/২টি প্রমোশন ও ১টি বেতনের গ্রেড পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে, যাতে একইরকম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে এসেও কেউ যেন শেষ বয়সে হতাশায় ভুগতে না পারে! এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিধিবিধান সংস্কারের জন্য গণতন্তের মানসকন্যা, বঞ্চিতের অভিভাবক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার শাসন আমলে ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল পুলিশ ও বিসিএস ক্যাডার পুলিশের সংখ্যা পুলিশে অর্ধেক-অর্ধেক করার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশও ৫০ বছরের বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে মোট ইন্সপেক্টরদের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৬ ভাগ পুলিশের ইন্সপেক্টর (৯ম গ্রেড) পদোন্নতি পেয়ে এএসপি (৯ম গ্রেড) হন। ফলে ৯৩ ভাগ ইন্সপেক্টর পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে চলে যান। এ কারণে ইন্সপেক্টরদের মধ্যে ডিউটি করার সময় এক ধরনের হতাশা কাজ করে। ২৫/৩০ বছর এক পদে চাকরি করার কারণে তাদের কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলে পুলিশ বিভাগে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, যা পুলিশের হাই অফিসিয়াল কর্মকর্তাগণ অবহিত আছেন। ফলে সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছে না, তাই আমরা এএসপি (৯ম গ্রেড) পদ পূরণে ৬৭ ভাগ ডিপার্টমেন্টাল পুলিশ (ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি হওয়া কর্মকর্তা) ও ৩৩ ভাগ সরাসরি বিসিএস ক্যাডার অফিসার নেয়া হোক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% ইন্সপেক্টর হতে এবং ৫০% এএসপি হতে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরন করা সময়ের দাবি। পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদোন্নতি পেয়ে যারা সহকারী পুলিশ সুপার (৯ম গ্রেড) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (১০ গ্রেড) হবেন তাদের বেতন গ্রেডের ও সুযোগ সুবিধার কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাচয় হবে এবং সরকারকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

একটি সূত্রে জানা যায় যে, বিট্রিশ আলমে বিট্রিশ অফিসারদের সাথে চাকুরি করলেও এদেশীয় একজন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর চাকুরির ২০/২৫ বছরের মধ্যে ডিআইজি হতো। আর এখন একই স্বদেশী অফিসারদের সাথে চাকুরি করলেও ৩০ বছরেও একই পদে কর্মরত থাকতে হচ্ছে। পদায়নের কোটা বৈষম্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টর ((৯ম গ্রেড) দের চোখে এএসপি, এডিশনাল এসপি ও এসপি পদে পদোন্নতি স্বপ্ন থেকে যাবে। অনেক পুলিশ সদস্য প্রশ্ন ? বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার সেই ফাইল কোথায়। এটা হারিয়ে কি গেছে ? না অদৃশ্য হয়েছে ? পুলিশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর দেখা প্রায় সব স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছে। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% ইন্সপেক্টর হতে এবং ৫০% এএসপি হতে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরন করার  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন বাধা কোথায় ? কতিপয় স্বার্থবাদী জন্য পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না। বাস্তব অবস্থার নিরিখে সরকারের উচিত বিট্রিশ আমলের পদোন্নতি নিয়ম র্নীতির সংকার করে সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) নিয়োগের ক্ষেত্রে সরাসরি ৩৩% এবং ইন্সপেক্টরদের মধ্যে হতে যোগ্যতার ভিত্তিতে ৬৭% নিয়োগ দেওয়া। সাব-ইন্সপেক্টর এবং সাজের্ন্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর হতে ৬০% এবং  সরাসরি ৪০% নিয়োগ দেওয়া মাধ্যমে পদোন্নতির জট ও জঠিলতা নিরসন  করা। এতে বিভাগীয় পুলিশ অফিসারদের পদোন্নতি পেলেও তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সুযোগ না থাকায় সরকারকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে না। আবার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ নিরশন হবে। কাজের র্স্পা বৃদ্ধি পাবে। এএসপি ও সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার এরুপ সিদ্ধান্ত নিলে পুলিশ বাহিনীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে অভিমত ব্যক্ত করেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অভিমত, পুলিশের রেশনের মতো পদোন্নতির বৈসম্য ও অসন্তোয় দূর করা এখনই সময়। কারন যার যা প্রাপ্য তা তাকে দিয়ে দিলে পুলিশ বাহিনীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পদোন্নতির প্রত্যাশায় পুলিশ কর্মচারীরা আরো দায়িত্ববান হবেন। এএসপি/অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ইন্সপেক্টরদের পদোন্নতি দিলে তাদের বেতন গ্রেডের কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। ফলে আলাদা কোন অর্থ সরকারের ব্যয় হবে না। মাঠ প্রশাসনে ক্ষোভ নিরশন হবে। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা আইন-শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হবে। সঠিকভাবে পদোন্নতি দেয়া হলে পদোন্নতি প্রত্যাশায় পুলিশ সদস্যগণ আরো দায়িত্ববান হবেন। সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করবে। যা আইন-শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করছে।এবং উভয় পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হবে এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত ডিআইজি ও ডিআইজি পদে পদোন্নতি দিতে হবে। অর্থাৎ পদোন্নতির ধারা যোগ্যতার মাপকাঠিতে সকলের জন্য অবারিত করতে হবে।  সাব-ইন্সপেক্টর ও পুলিশ ইন্সপেক্টরদের জন্য একটি বিধিমালা প্রণয়ন করে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের আওতাভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো পদমর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা অবারিত করতে হবে। আর একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্সপেক্টরদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার পূর্ণ মর্যাদা দিতে হবে। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা কখনোই অধস্তন হয় না । বাংলাদেশের কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা অধস্তন কর্মকর্তা নয় । তাহলে পুলিশ ইন্সপেক্টর অধস্তন কর্মকর্তা নয় । পিআরবি ও পুলিশ আইন সংশোধন করে পুলিশ ইন্সপেক্টর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা করতে হবে।  র্যা বে পুলিশ পরিদর্শকদের উপ-সহকারী পরিচালক পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের সহকারী পরিচালক পদ দেওয়া আছে । এখানে সব থেকে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে অন্যান্য বাহিনীর ২য় ও ৩য় শ্রেণীর সদস্যদের প্রথম শ্রেণীর পুলিশ ইন্সপেক্টরের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।  উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার এবং দীর্ঘ বার বছর ধরে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে পদোন্নতিযোগ্য পুলিশ ইন্সপেক্টরগণ উচ্চতর ( এডিশনাল এসপি) পদে পদোন্নতি না পেয়ে হতোদ্যম হয়ে পড়ছে এবং পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরে নানারকম গুঞ্জন উঠছে ও ফুঁসে উঠছেন তারা।  সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার হতে প্রথম শ্রেণীর ক্যাডারে পদোন্নতি পাচ্ছে।  এইতো যখন পুলিশ ইন্সপেক্টর দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদ ছিল তখনও তো প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার (এএসপি) পদে পদোন্নতি পেয়েছে। এখন পুলিশ পরিদর্শক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হওয়ায় তার পরবর্তী উচ্চপদ হচ্ছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাই পুলিশ পরিদর্শক পদের পদোন্নতিতে তারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ প্রাপ্ত হবেন। সরাসরি এসআই /সার্জেন্ট নিয়োগ পিএসসি’র অধীনে হতে হবে।  সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টরদের ২য় শ্রেণীর কর্মকর্তার পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে রিবন উঠিয়ে এক পিপ্স দিতে হবে । আমাদের পদোন্নতি পিএসসির মাধ্যমে হলে এবং পদোন্নতি ও সিনিয়র স্কেল বিধিমালা প্রস্তুত করা হলে, অন্তত উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির পথ সুগম হবে। বাংলাদেশ সচিবালয় (ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা,২০১৯ এর আলোকে বাংলাদেশ পুলিশ (নন-ক্যাডার) বিধিমালা তৈরী করতে হবে। যেমন বিধিমালা আছে, সচিবালয়ের এও(এডমিনেস্ট্রেটিভ অফিসার), উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমাজ সেবা কর্মকর্তাদের জন্য। আমাদের একই সাথে প্রথম শ্রেনীর নন ক্যাডার এ যোগদান করা অন্য ডিপার্টমেন্ট এর অফিসারেরা এখন ৬ বছরের মাথায় এসে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশের ইন্সপেক্টরদের বেলাতে নবম স্কেল যেন কপালে সীলমোহর এঁকে দিয়েছে। এএসপি থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা সবাই পিএসসি এর অধীনে থাকলে, প্রথম শ্রেণীর পরিদর্শকদের পিএসসি’র অধীনে রাখলে সমস্যা কোথায়? প্রতিবেশী ভারতের পান্জাবে ১৯৯১ সালে এএসআই পদে ভর্তি হয়ে ২০০৯ সালে ডিএসপি এবং ২০১৫ সালে এসপি হয়।  অন্য অনেক রাষ্ট্রে এমন উদাহরণ আছে। আরো একটি উদাহরণ- একজন ২০১০ সালে সোনালি ব্যাংকে অফিসার পদে (২য় শ্রেণী) যোগদান করেন। তিনি ২০১৬ সালে সিনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি পান (যেটা ১ম শ্রেণী)। ২০২০ সালে অর্থাৎ মাত্র চার বৎসর পর তিনি ৬ষ্ঠ গ্রেডে প্রমোশন পান। আর আমরা ১ম শ্রেণী হয়ে প্রহর গুনছি কবে ২০-২৫ বৎসর হবে তারপর আবার ১ম শ্রেণী (৯ম গ্রেড) তে পদোন্নতি পাবো। বাংলাদেশের মতো এত বাজে অবস্থা পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে বলে আমাদের জানা নেই! তাই, সময় এসেছে পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করে দ্রুত এসব উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করার।

আর যদি আন্তরিকতার অভাবে এসব সমস্যা সমাধানে খুবই সমস্যা হয়, তবে নিন্মের ধাপগুলোর যে কোনো একটি ফলো করা যায়ঃ ১. বর্তমানের তিন ধাপের নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে উন্নত দেশের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে শুধুমাত্র কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদান, যাতে ১ম চারটি পদে অটোপ্রমোশন এবং পরবর্তী ধাপে পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতম ব্যক্তিকে প্রমোশন ও চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে আইজিপি পর্যন্ত প্রমোশন প্রদান। ২. সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ বাতিল করে সামরিক বাহিনীর মতো কনস্টেবল ও অফিসার পদে দুই ধাপে নিয়োগ প্রদান, যাতে যার যার শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদনকারী আবেদন করতে পারে। ৩. নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা, সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টর পদে ঢুকলে সারাজীবন ১/২টি প্রমোশন ও ১টি বেতনের গ্রেড পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে, যাতে একইরকম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে এসেও কেউ যেন শেষ বয়সে হতাশায় ভুগতে না পারে! এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিধিবিধান সংস্কারের জন্য গণতন্তের মানসকন্যা, বঞ্চিতের অভিভাবক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার শাসন আমলে ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল পুলিশ ও বিসিএস ক্যাডার পুলিশের সংখ্যা পুলিশে অর্ধেক-অর্ধেক করার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশও ৫০ বছরের বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে মোট ইন্সপেক্টরদের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৬ ভাগ পুলিশের ইন্সপেক্টর (৯ম গ্রেড) পদোন্নতি পেয়ে এএসপি (৯ম গ্রেড) হন। ফলে ৯৩ ভাগ ইন্সপেক্টর পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে চলে যান। এ কারণে ইন্সপেক্টরদের মধ্যে ডিউটি করার সময় এক ধরনের হতাশা কাজ করে। ২৫/৩০ বছর এক পদে চাকরি করার কারণে তাদের কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলে পুলিশ বিভাগে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, যা পুলিশের হাই অফিসিয়াল কর্মকর্তাগণ অবহিত আছেন। ফলে সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছে না, তাই আমরা এএসপি (৯ম গ্রেড) পদ পূরণে ৬৭ ভাগ ডিপার্টমেন্টাল পুলিশ (ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি হওয়া কর্মকর্তা) ও ৩৩ ভাগ সরাসরি বিসিএস ক্যাডার অফিসার নেয়া হোক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% ইন্সপেক্টর হতে এবং ৫০% এএসপি হতে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরন করা সময়ের দাবি। পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদোন্নতি পেয়ে যারা সহকারী পুলিশ সুপার (৯ম গ্রেড) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (১০ গ্রেড) হবেন তাদের বেতন গ্রেডের ও সুযোগ সুবিধার কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাচয় হবে এবং সরকারকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

একটি সূত্রে জানা যায় যে, বিট্রিশ আলমে বিট্রিশ অফিসারদের সাথে চাকুরি করলেও এদেশীয় একজন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর চাকুরির ২০/২৫ বছরের মধ্যে ডিআইজি হতো। আর এখন একই স্বদেশী অফিসারদের সাথে চাকুরি করলেও ৩০ বছরেও একই পদে কর্মরত থাকতে হচ্ছে। পদায়নের কোটা বৈষম্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টর ((৯ম গ্রেড) দের চোখে এএসপি, এডিশনাল এসপি ও এসপি পদে পদোন্নতি স্বপ্ন থেকে যাবে। অনেক পুলিশ সদস্য প্রশ্ন ? বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার সেই ফাইল কোথায়। এটা হারিয়ে কি গেছে ? না অদৃশ্য হয়েছে ? পুলিশকে নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর দেখা প্রায় সব স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছে। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% ইন্সপেক্টর হতে এবং ৫০% এএসপি হতে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরন করার  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা কোথায় ? কতিপয় স্বার্থবাদী জন্য পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না। বাস্তব অবস্থার নিরিখে সরকারের উচিত বিট্রিশ আমলের পদোন্নতি নিয়ম র্নীতির সংকার করে সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) নিয়োগের ক্ষেত্রে সরাসরি ৩৩% এবং ইন্সপেক্টরদের মধ্যে হতে যোগ্যতার ভিত্তিতে ৬৭% নিয়োগ দেওয়া। সাব-ইন্সপেক্টর এবং সাজের্ন্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর হতে ৬০% এবং  সরাসরি ৪০% নিয়োগ দেওয়া মাধ্যমে পদোন্নতির জট ও জঠিলতা নিরসন  করা। এতে বিভাগীয় পুলিশ অফিসারদের পদোন্নতি পেলেও তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সুযোগ না থাকায় সরকারকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে না। আবার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ নিরশন হবে। কাজের র্স্পা বৃদ্ধি পাবে। এএসপি ও সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার এরুপ সিদ্ধান্ত নিলে পুলিশ বাহিনীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে অভিমত ব্যক্ত করেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অভিমত, পুলিশের রেশনের মতো পদোন্নতির বৈসম্য ও অসন্তোয় দূর করা এখনই সময়। কারন যার যা প্রাপ্য তা তাকে দিয়ে দিলে পুলিশ বাহিনীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পদোন্নতির প্রত্যাশায় পুলিশ কর্মচারীরা আরো দায়িত্ববান হবেন। এএসপি/অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ইন্সপেক্টরদের পদোন্নতি দিলে তাদের বেতন গ্রেডের কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। ফলে আলাদা কোন অর্থ সরকারের ব্যয় হবে না। মাঠ প্রশাসনে ক্ষোভ নিরশন হবে। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা আইন-শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হবে। সঠিকভাবে পদোন্নতি দেয়া হলে পদোন্নতি প্রত্যাশায় পুলিশ সদস্যগণ আরো দায়িত্ববান হবেন। সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করবে। যা আইন-শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৭:৩৩ ● ৬৬৫৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ