আজ শহীদ আসাদ দিবস

প্রথম পাতা » লিড নিউজ » আজ শহীদ আসাদ দিবস
রবিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০১৯


ফাইল ছবি
সাগরকন্যা ডেস্ক ॥
আজ রবিবার শহীদ আসাদ দিবস। তদানিন্তন পাকিস্তানের স্বৈরাচার শাসক আইয়ুব খানের পতনের দাবিতে মিছিল করার সময় ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। শহীদ আসাদ হচ্ছেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের পথিকৃৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের তিন শহীদদের একজন। অন্য দু’জন হচ্ছেন শহীদ রস্তম ও শহীদ মতিউর। দিবসটি উপলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা দাবির স্বপে এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামীদের মুক্তি দাবির আন্দোলনে আসাদের মৃত্যু পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে। যা পরবর্তীতে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে তরান্বিত করে।

১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রদের ১১ দফা এবং বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপী সকল শিা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেয়। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা আইন জারি করেন। পূর্ব কর্মসূচি অনুসারে ২০ জানুয়ারি দুপুরে ছাত্রদেরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পার্শ্বে চাঁন খাঁর পুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ তাদেরকে চাঁন খাঁ’র পুলে বাঁধা দেয় ও চলে যেতে বলে।

কিন্তু বিােভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান নেয় এবং পরে আসাদ ও তার সহযোগীরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে মিছিল সহকারে অগ্রসর হয়। ওই অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে ল্য করে এক পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবর্ষণ করে। তৎণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্র হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুণরায় গুলিবর্ষণ করে।

২০১৮ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য শহীদ আসাদকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। আন্দোলনে পুলিশের গুলিবর্ষণে আসাদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের অনেক জায়গায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আইয়ুব খানের নামফলক পরিবর্তন করে শহীদ আসাদ রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় সংসদ ভবনের ডান পার্শ্বে মোহাম্মদপুরে অবস্থিত আইয়ুব গেটের নাম পরিবর্তন করে আসাদ গেট রাখা হয়। প্রতি বছরই জানুয়ারির ২০ তারিখে শহীদ আসাদের মহান আত্মত্যাগ ও অবদানকে বাঙালি জাঁতি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গভীর শ্রদ্ধার সাথে শহীদ আসাদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। দিবসটি উপলে আজ রোববার বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠন নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

শহীদ আসাদের ৫০তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ‘শহীদ আসাদ দিবস ও ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ৫০ বছর পালন জাতীয় কমিটি’ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নির্মিত আসাদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে এবং আসাদের সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবে। একই সাথে জাতীয় কমিটির প থেকে বেলা ১১ টায় নরসিংদীর শিবপুরে শহীদ আসাদের কবরেও পুষ্পস্তবক প্রদান করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। এই উপলে জাতীয় কমিটির প থেকে পোস্টার ও স্মরণিকা সুভ্যেনির প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির প থেকে ২৪ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সড়ক দ্বীপে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে শহীদ আসাদ দিবসে সকাল ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শহীদ আসাদ স্মৃতিস্তম্ভে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এ সময় পার্টির কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এ দিকে আসাদের নিজ গ্রাম নরসিংদীর শিবপুরে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবে পার্টি নেতৃবৃন্দ।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ৭:২৯:০৭ ● ৪৫৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ