মহাসড়কে কুয়াকাটা পৌরসভার রশিদে টোল আদায়!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » মহাসড়কে কুয়াকাটা পৌরসভার রশিদে টোল আদায়!
বুধবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২২


মহাসড়কে কুয়াকাটা পৌরসভার রশিদে টোল আদায়!

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

 

 

পর্যটন শহর কুয়াকাটার প্রবেশমুখে মহাসড়কে পৌরসভার রশিদে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিগত দুইদিন ধরে পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কও জনপথের রাস্তায় যাতায়াতকারাী পর্যটকবাহীও যাত্রীবাহী বাসসহ সকল প্রকার যানবাহন থেকে ২০ থেকে ১’শ টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করছে। নির্মাণাধীন বাসষ্টান্ডের কাজ সম্পন্ন হয়নি, এমনকি উদ্বোধনও হয়নি। তবুও ওই বাসষ্ট্যান্ডের নামে মহাসড়কে চলছে টোল আদায়ের কাজ। কুয়াকাটা পৌরসভা গঠনের পর থেকে এমন ব্যবস্থা চালু না থাকায় বিব্রত হচ্ছেন আগত পর্যটকসহ দর্শণার্থীরা। তবে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের অনুমতি ক্রমে এ টোল আদায় করছেন বলে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবী।

স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীসহ ট্রাক, ট্রলি, পিকআপ, ভ্যান মালিকও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ কুয়াকাটা পৌরসভা বে-আইনিভাবে মহসড়কে এ টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করছে। এঘটনায় গত দুইদিন ধরে নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী ২ শতাধিক ট্রলি গাড়ী বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রলি মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জামাল মল্লিক।

সরেজমিনে বুধবার বিকেলে দেখাগেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার নির্মাণাধীন বাস টার্মিনালের পাশে মহাসড়কে তৈলের ব্যারেল, বাঁশ ও লাল কাপড় দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেট করে রেখেছে। মঙ্গলবার থেকে ৩/৪জন যুবক চেয়ার টেবিল বসিয়ে গাড়ি দামিয়ে পৌরসভার স্লিপ ধরিয়ে যাত্রীবাহী পরিবহন, ট্র্যাক ও কভার্ডভানসহ ভারী যানবাহন থেকে ১০০ টাকা। মাইক্রোবাস, মিনিবাসসহ মাঝারী গাড়িগুলো থেকে ৫০-৭০ টাকা। ভ্যান, রিক্সাসহ হালকা যানবাহন থেকে ২০ টাকা করে রাত দিন আদায় করছে। আদায়কৃত রশিদ বইতে পৌরসভার স্মারক নাম্বারসহ পৌরকর্তৃপক্ষের ইজার আদায়ের অনুমোদনের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। টোল আদায়কারী কুয়াকাটা পৌরসভার পরিচ্ছনতাকর্মীর সুপারভাইজার মো: ইউনুছ হাওলাদার বলেন, বাসষ্ট্যান্ডের খাস আদায়ের জন্য পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছে। ট্রলি ড্রাইভার হাবিব খান জানায়, দৈনিক ৮-১০ বার কুয়াকাটা পৌরসভার আভ্যন্তরে মাল পরিবহন করতে হয়। প্রতিবার মাল পরিবহনে ১’শ টাকা দিলে লাভের সবটুকুই দিতে হবে। ট্রলি মালিক সমিতির সভাপতি কামাল গাজী সাগরকন্যাকে বলেন, মহসড়কে আটকিয়ে এ টাকা আদায় পৌরসভার নিছক চাঁদাবাজি ছাড়া অন্য কিছুই হতে পারে না। সুবিধাভোগীদের সাথে পরামর্শ ছাড়া ইমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না পৌরসভা।

পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা কাব্যলাল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তিনবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও মাছ মহল, বাঁশ সামগ্রী ও বাসষ্ট্যান্ডের জন্য ইজারাদার পাওয়া যায়নি। পৌরসভার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত ও অনুমোদনক্রমে খাস আদায় চলছে। বাসষ্টান্ডের কাজ চলমান রয়েছে, এমনকি উদ্বোধন হয়নি সেক্ষেত্রে মহাসড়কে টোল আদায়ের যৌক্তিতা জানতে চাইলে কাব্যলাল চক্রবর্তী এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যায়।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, সওজ’র সড়কে টোল আদায়ের সুযোগ নেই পৌরসভার।

কুয়াকাটা পৌর সভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বাস ষ্ট্যান্ডের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়। বৈশাখ মাসে পৌরসভার হাটবাজারসহ রাজস্ব আদায়ের আর্থিক বছর শুরু হওয়া দরপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কাম্যসংখ্যক দরদাতা ও ইজারার ন্যাযতা না পাওয়া ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সিদ্ধান্তে খাস আদায় চলছে।

কুয়াকাটা হোটেল- মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ মোতালেব শরীফ জানিয়েছেন, মহসড়কে টোল আদায় কুয়াকাটা পর্যটন শিল্পে নীতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি আরও বলেন, এমন অবস্থা কুয়াকাটা পৌরসভা চালু রাখলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় একজ নপর্যটককে অন্ততঃ ৩’শ পৌরসভায় টোল দিয়ে আসতে হবে।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, মহসড়কে পৌরসভার খাস আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাসষ্ট্যান্ডের দরপত্রে কাঙ্খিত ইজাদারদার না পাওয়া খাস আদায়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে বাস ষ্ট্যান্ড নির্মাণাধীন,পুনাঙ্গ চালু হলেই টোল আদায়ের বিষয়টি বলবৎ থাকবে।

 

 

 

কেএআর/এমআর

 

বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৮:২৯ ● ৭৩৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ